দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় (১৯৩৯-১৯৪৫), ১৯৪৪ সালের জুন থেকে ১৯৪৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল নরম্যান্ডির যুদ্ধ। এর ফলে মিত্র শক্তি পশ্চিম ইউরোপকে নাৎসি জার্মানির নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্তি দেয়। অপারেশন ওভারলর্ড (Operation Overlord) কোডনামে, এ যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ১৯৪৪ সালের ৬ জুন তারিখে, এবং এই দিনটি ইতিহাসে ডি-ডে D-Day নামে পরিচিত।
সামরিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখলে , ডি-ডে (D-Day) হ’ল সেই দিন যখন কোন যুদ্ধ, আক্রমণ বা অপারেশন শুরু করা উচিত বলে মনে করা হয়েছিলো। এটি ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ১৯৪৪ সালের ৬ জুন, নরম্যান্ডির উপকুলে অবতরণের দিন।
প্রাথমিকভাবে ১৯৪৪ সালের ৫ জুনকে ডি-ডের জন্য নির্ধারণ করা হলেও খারাপ আবহাওয়া এবং সমুদ্রের অবস্থা ভালো না থাকায় মার্কিন সেনাবাহিনীর জেনারেল ডুইট ডেভিড আইজনহোয়ার ৬ জুন অবধি অপেক্ষা করার সিধান্ত নিয়েছিলেন এবং এই তারিখটি তখন থেকেই জনপ্রিয়ভাবে সংক্ষিপ্ত শিরোনাম “ডি-ডে (d day)” হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ।
মূলত, পৃথিবীর ইতিহাসে এ দিনটি কেন এবং কতটা গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয়টাই এখানে আলোচনা করার সামান্য চেস্টা করা হয়েছে মাত্র।
ডি-ডের প্রস্তুতি হিসেবে দ্বিতীয় ফ্রন্টের সূচনা
![Eisenhower_d-day](https://www.factsw.com/wp-content/uploads/2020/04/Eisenhower_d-day-min.jpg)
১৯৪২ সালে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট একটি বিবৃতি জারি করেছিলেন যে, পশ্চিমা মিত্ররা সোভিয়েতদের উপর চাপ কাটাতে দ্বিতীয় একটি ফ্রন্ট খোলার জন্য যত দ্রুত সম্ভব কাজ করবে। যদিও এই লক্ষ্যে তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলো তা সত্ত্বেও, মিত্র বাহিনীর কিছু সদস্য ব্রিটিশদের কাছে কিছু ইস্যু উত্থাপন করেছিল।
এর মধ্যে ভূমধ্যসাগর থেকে উত্তর ভূমধ্যসাগর, ইতালির মধ্যভাগ দিয়ে দক্ষিণ দিক হয়ে তারা জার্মানিতে প্রবেশ করাটা বেশি ভালো হবে বলে মতামত দিয়েছিলো। এই কৌশলগত মতামতের পক্ষে উইনস্টন চার্চিল সমর্থন করেছিলেন।
তিনি মূলত চেয়েছিলেন, সোভিয়েত ইউনিয়নের দখলকৃত অঞ্চলকে কিছুটা সীমাবদ্ধ করার জন্য। সে লক্ষে ব্রিটিশ এবং আমেরিকান সৈন্যদের অবস্থান ধরে রাখার জন্য দক্ষিণ দিক থেকে এক ফ্রন্ট লাইনের পরিকল্পনা করেছিলেন।
মূলত ডি-ডের (d day) আক্রমণের পরিকল্পনা শুরু হয়েছিল ১৯৪৩ সালে থেকেই এবং এর কোড নেম রাখা হয়েছিল অপারেশন ওভারলর্ড। তেহরান সম্মেলনে চার্চিল, রুজভেল্ট এবং সোভিয়েত নেতা জোসেফ স্ট্যালিন এ অপারেশনের সম্ভাব্য তারিখ নিয়ে আলোচনা করেছিলেন।
সে বছরের নভেম্বর মাসে, এই পরিকল্পনা বিষয়ে জেনারেল ডুইট ডি আইজেনহওয়ারের কাছ থেকে চূড়ান্ত মতামত নেয়া হয়। সাধারণত এ সময় থেকেই তাকে মিত্র বাহিনীর সুপ্রিম কমান্ডার হিসাবে পদোন্নতি দেয়া হয়েছিল এবং ইউরোপের সমস্ত মিত্র বাহিনীর সুপ্রিম কমান্ড তাকে দেওয়া হয়েছিল।
আইজেনহওয়ার সুপ্রিম অ্যালাইড কমান্ডার (COSSAC) এর চিফ অফ স্টাফ, লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফ্রেডরিক ই মরগান এবং মেজর জেনারেল রে বার্কার এর সাথে আলোচনা করে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। কসস্যাক (COSSAC) পরিকল্পনার আওতায়, নর্ম্যান্ডিতে তিনটি পদাতিক বিভাগ এবং দুটি বিমান বাহিনীর ব্রিগেডের অবতরণ করার কথা বলা হয়েছিল।
ইংল্যান্ডের কাছাকাছি হওয়ার কারণে এই অঞ্চলটি COSSAC পরিকল্পনার দ্বারা বেছে নেওয়া হয়েছিল। এখানে বিমান সাপোর্ট এবং পরিবহণের পাশাপাশি একটি অনুকূল ভৌগলিক পরিবেশ পাওয়ার পক্ষে বেশ ভালো একটি অবস্থা বজায় ছিল।
আরও পড়ুনঃ- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা এবং সমাপ্তি
মিত্র বাহিনীর পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণ
![Paratroopers_just_before_They_Took_off_for_the_Initial_Assault_of_D-Day-min](https://www.factsw.com/wp-content/uploads/2020/04/Paratroopers_just_before_They_Took_off_for_the_Initial_Assault_of_D-Day-min.jpg)
COSSAC পরিকল্পনা গ্রহণ করে আইজেনহাওয়ার আক্রমণের সময়, স্থল বাহিনীকে কমান্ড দেওয়ার জন্য জেনারেল স্যার বার্নার্ড মন্টগোমেরিকে নিয়োগ করেছিলেন। COSSAC পরিকল্পনা সম্প্রসারণ করে মন্টগোমেরি বিমান বাহিনীর তিনটি বিভাগের পরিবর্তে পাঁচটি বিভাগকে অবতরণের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন। মন্টগোমেরির এই পরিবর্তন অনুমোদিত হয়েছিল এবং পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণ পুরদমে এগিয়ে চলছিলো।
চূড়ান্ত পরিকল্পনায়, মেজর জেনারেল রেমন্ড ও বার্টনের নেতৃত্বে আমেরিকান চতুর্থ পদাতিক বিভাগ পশ্চিমে ইউটাহ বিচে অবতরণ করতে চেয়েছিল, এবং প্রথম ও ২৯ তম পদাতিক বিভাগ ওমাহা বিচের পূর্ব দিকে অবতরণ করবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।
এই বিভাগগুলোর অধিনায়ক ছিলেন যথাক্রমে মেজর জেনারেল ক্লারেন্স আর হুবনার এবং মেজর জেনারেল চার্লস হান্টার জেরহার্ড। দুটি আমেরিকান সৈকতে এ রকম প্রশিক্ষণ চলেছিল। জার্মান রাইফেলের শীর্ষে, অবস্থান করার দায়িত্ব লেফটেন্যান্ট কর্নেল জেমস ই রুডারের ২য় রেঞ্জার ব্যাটালিয়নকে দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া, এখানকার প্রশিক্ষণে, আক্রমনের পুরো বিশয়গুলকে ঝালিয়ে নেয়া হয়েছিলো।
মিত্র বাহিনীর প্রতারণা কৌশল
![Operation_Overlord_the_Normandy_Landings-_D-day_6_June_1944](https://www.factsw.com/wp-content/uploads/2020/04/Operation_Overlord_the_Normandy_Landings-_D-day_6_June_1944_B5207.jpg)
Operation_Overlord_the_Normandy_Landings-_D-day_6_June_1944
১৯৪৩ সালের শেষের দিকে, ফ্রান্সে নিযুক্ত জার্মান সেনাপতি ফিল্ড মার্শাল গার্ড ভন রুনডস্টেট এর ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করা হয়েছিল। সেই সাথে জার্মান কমান্ডার ফিল্ড মার্শাল এরউইন রোমেলকে বিশেষ কিছু দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থা পরিদর্শন করার পরে, রোমেল কিছু বিষয়ে ত্রুটি দেখতে পেয়েছিলেন এবং আদেশ দিয়েছিলেন সামরিক খাতে আরও শক্তি বাড়ানো হবে।
পরিস্থিতি মূল্যায়ন করার পরে, জার্মানরা বিশ্বাস করেছিল যে মিত্র বাহিনী যে আক্রমণটি করতে যাচ্ছে, সেটা ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের নিকটতম প্যাস পেরো দ্য ক্যালাইসের দিক দিয়ে হবে। জার্মানদের এই বিশ্বাসকে মিত্র বাহিনীর একটি প্রতারণা প্রকল্পের কৌশল হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। অপারেশন ফরটিচিউড (Operation Fortitude) দ্বারা এ প্রকল্পটিকে কার্যকরী করা হয়েছিল।
দ্বিতীয় ফ্রন্ট দুটি বড় ধাপে বিভক্ত হয়ে, জার্মানদের বিভ্রান্ত করতে ডাবল এজেন্ট পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নেমেছিল নকল রেডিও ট্র্যাফিক ব্যাবস্থা এবং কল্পিত ইউনিট তৈরির মাধ্যমে। প্রথম মার্কিন সেনা গ্রুপ, বৃহত্তম রেপ্লিকা বাহিনী তৈরি্র কাজ শুরু হয়েছিলো লেফটেন্যান্ট জেনারেল জর্জ এস প্যাটনের (Lieutenant General George S. Patton) নেতৃত্বে।
ক্যালাইসের দক্ষিণ-পূর্বে ড্যামি বিল্ডিং, বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জামাদি এবং এগুলো উদ্বোধনের বিভিন্ন পয়েন্ট এবং ল্যান্ডিং ক্র্যাফট নির্মাণ করা হয়েছিল। এ সকল প্রচেষ্টা শেষ পর্যন্ত সফল প্রমাণিত হয়েছিল এবং জার্মান গোয়েন্দারা হিটলারকে নিশ্চিত করেছিলো যে নর্ম্যান্ডিতে মিত্র বাহিনীর অবতরণ শুরু হওয়ার পরে মূল আক্রমণটি ক্যালাইস থেকেই আসবে।
পরিকল্পনা মাফিক নির্ধারিত সময়মের মধ্যে আক্রমণের জন্য মিত্র বাহিনীর একটি সামুদ্রিক জোয়ারের প্রয়োজন ছিল। আইজেনহাওয়ার প্রথমে ৫ জুন এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন, তবে আবহাওয়া এবং উচ্চ সমুদ্রিক ঢেউ এর কারণে তিনি দেরি করতে বাধ্য হন।
আক্রমণ বাহিনীকে বন্দরে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি তিনি গ্রুপ ক্যাপ্টেন জেমস এম স্ট্যাগের (James S. Stag) নিকট থেকে ৬ জুনের জন্য অনুকূল আবহাওয়া পাওয়া যাবে কি না সে বিষয়ে প্রতিবেদন চেয়েছিলেন। কিছুটা বিতর্কের পরে, ৬ জুন আক্রমণের আদেশ জারি করা হয়েছিল।
ভুল গোয়েন্দা তথ্যের কারণে জার্মানরা বিশ্বাস করেছিল, জুনের শুরুতে হয়তো কোনও আক্রমণ হবে না। ফলস্বরূপ, জার্মান কমান্ডার রোমেল তার স্ত্রীর জন্মদিনের পার্টিতে অংশ নিতে জার্মানিতে ফিরে এসেছিলেন এবং অনেক কর্মকর্তা রেনসে যুদ্ধের খেলায় অংশ নিতে তাদের ইউনিট ত্যাগ করেছিলেন।
ডি-ডে (d day)
![416thbg-a20-d-day-min.jpg](https://www.factsw.com/wp-content/uploads/2020/04/416thbg-a20-d-day-min.jpg)
মধ্যরাতের পরই মিত্র বাহিনীর বোমারু বিমানগুলো নরম্যান্ডির জুড়ে জার্মান অবস্থানের উপর হামলা চালিয়ে, সমুদ্র সৈকতে হামলা শুরু করেছিল। এবং এর পর পরই ভারী নৌ-বোমা হামলা শুরু হয়। খুব ভোরে, সৈন্যদের বিশাল একটি অংশ সৈকতে আঘাত করতে শুরু করে।
পূর্ব দিকে, ব্রিটিশ এবং কানাডিয়ান সৈন্যরা প্রাথমিক প্রতিরোধকে কাটিয়ে ওঠার পরে, কিছুটা সুবিধা করতে সক্ষম হয়েছিল। যদিও কেবল কানাডিয়ানরা শুধুমাত্র তাদের ডি-ডে (d day) লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছিল।
পশ্চিমে আমেরিকান সৈকতের পরিস্থিতি ছিল একেবারেই আলাদা। ওমাহা বিচে মার্কিন সৈন্যরা পুরাতন জার্মান ৩৫২ তম পদাতিক বাহিনীর ভারী গোলা বর্ষণের কবলে পড়েছিল। আসলে এ পরিস্থিতি হওয়ার কারণ ছিল আক্রমণাত্মক বোমা হামলা কিছুটা ব্যার্থ হয় এবং তারা জার্মান দুর্গগুলো ধ্বংস করতেও ব্যর্থ হয়েছিল।
মার্কিন ১ম এবং ২৯ তম পদাতিক বাহিনী প্রাথমিক প্রচেষ্টাতে জার্মান প্রতিরক্ষা ভেঙে সামনে প্রবেশ করতে অসমর্থ হয়েছিল এবং সৈন্যরা সৈকতে আটকা পড়েছিল। এখানে জার্মানদের আক্রমণে ২,৪০০ জন আমেরিকান সেনা প্রাণ হারায়। এটা ছিল সে সময় যে কোন সৈকতের তুলনায় আমেরিকানদের জন্য অনেক বড় ক্ষতি।
পশ্চিমে ২য় রেঞ্জার ব্যাটালিয়ন পয়েন্ট ডু হক স্কেলিং এবং ক্যাপচারে বেশ সফল হয়েছিল, তবে জার্মান পাল্টা আক্রমণের কারণে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়। উটা বিচে, মার্কিনিদের মাত্র ১৯৭ জন সৈন্য প্রান হারায়। যে কোনও সৈকতের চেয়ে এটা ছিল তাদের জন্য বেশ কম সংখ্যক হতাহতের সংখ্যা এবং স্বস্তির বিষয়।
আসলে আমেরিকান সেনারা প্রচন্ড স্রোতের কারণে দুর্ঘটনাক্রমে ভুল জায়গায় এসে পৌঁছেছিল। অবস্থানের বাইরে থাকলেও, উর্ধ্বতন অফিসার, ব্রিগেডিয়ার থিওডোর রুজভেল্ট জুনিয়র বলেছিলেন যে তারা “এখান থেকেই যুদ্ধ শুরু করবে” এবং এরপরে তারা পরবর্তী নতুন জায়গায় উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ পান।
ডি-ডের ফলাফল এবং পরবর্তী অবস্থা
৬ জুন রাত্রে মিত্রবাহিনী তাদের অবস্থান নরম্যান্ডিতে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছিল। যদিও তারা যেখানে উপস্থিত হতে চেয়েছিল, সেখানে তারা আসলেই উপস্থিত হতে পেরেছিল কিনা সে বিষয়ে তারা নিশ্চিত ছিলোনা। ডি-ডেতে হতাহতের সংখ্যা ছিল প্রায় ১০,৪০০ জন এবং জার্মানদের প্রায় ৪০০০-৯০০০ জন।
পরের বেশ কয়েক দিন ধরে মিত্রবাহিনীর সেনারা জার্মান অভ্যন্তরীণ ভাগের বিভিন্ন স্থানে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে পেরেছিল, এবং কয়েকদিন পরে জার্মানরা সৈকত থেকে তাদের বাহিনী সরিয়ে নিয়ে যায়। এই প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ফ্রান্সের রিজার্ভ প্যানজার বিভাগ ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে বার্লিন অনীহা দেখায়। তারা ভেবেছিল মিত্র বাহিনী এখনও হয়তো পাস দে ক্যালাইসে আক্রমণ করবে।
আক্রমণ অব্যাহত রেখে মিত্র বাহিনী চেরবার্গ বন্দরের দক্ষিণে এবং কেন শহরের দিকে যাওয়ার জন্য উত্তর দিক থেকে অগ্রসর হয়। আমেরিকান সেনারা যখন উত্তর দিকে যাত্রা শুরু করেছিল, তখন তারা বকেজ (হেজারস) দ্বারা বাধাগ্রস্ত হয়েছিল।
প্রতিরক্ষামূলক যুদ্ধের জন্য আদর্শ, বোকেজ আমেরিকান অগ্রগতিকে অনেকটাই ধীর করে দিয়েছিল। কেইনকে ঘিরে ব্রিটিশ বাহিনী জার্মানদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল। অপারেশন কোবারার অংশ হিসাবে ২৫ জুলাই মার্কিন ফার্স্ট আর্মি সেন্ট লোতে জার্মান লাইনগুলি ভেঙে দেওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতির খুব একটা আমূল পরিবর্তন হয়েছিলোনা।
১৯৪৪ সালের আগস্টের শেষের দিকে মিত্ররা সিন নদীতে পৌঁছেছিল, এবং প্যারিসকে স্বাধীন করা সম্ভব হয়েছিল। এরপরে মিত্রবাহিনী জার্মানি প্রবেশের জন্য প্রস্তুত হয়, এবং একটি সিদ্ধান্ত হয় যে, তারা পূর্ব থেকে সোভিয়েত সেনাদের সাথে সাক্ষাত করবে।
নরম্যান্ডির আক্রমণ নাৎসিদের বিরুদ্ধে মিত্র বাহিনীর যুদ্ধের জোয়ারকে ফিরিয়ে দিতে শুরু করে। জার্মানদের জন্য এটি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ মনস্তাত্ত্বিক আঘাত, এবং এর ফলে হিটলারকে তার আগ্রাসন থামিয়ে দিতে সবচেয়ে বড় ভুমিকা পালন করেছিলো। এর পরের বসন্তে, ১৯৪৫ সালের ৮ ই মে, মিত্ররা নাৎসি জার্মানির নিঃশর্ত আত্মসমর্পণকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করে। এর এক সপ্তাহ আগে (৩০ এপ্রিল, ১৯৪৫) হিটলার আত্মহত্যা করেন।
তথ্যসূত্রঃ- https://www.history.com/topics/world-war-ii/d-day
https://www.thoughtco.com/d-day-the-invasion-of-normandy-3863640
https://en.wikipedia.org/wiki/Normandy_landings
https://www.thoughtco.com/d-day-normandy-1779969