দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (second world war) পরের ইহুদী মাইগ্রেশন

হিটলার ইহুদীদের তাড়াতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি কি পেরেছিলেন? কি উত্তর দিবেন পাঠক। আমরা অনেকেই অনেক সময় জানতে চেস্টা করেছি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে হলোকাস্ট থেকে বেঁচে যাওয়া ইহুদীদের কি অবস্থা হয়েছিল। এ বিশয়টা আসলেই গুরুত্বপূর্ণ, কারন তাদের সম্পর্কে অনেক সময়ই ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া আমরা দেখতে পাই।

এদের কেউ পছন্দ করে, কেউ বা আবার ঘৃণা করে। তবে যেটাই হোক না কেন, একজন মানুষ হিসেবে, একটা অতি প্রতিভাবান জাতী হিসেবে ইহুদীদের আমরা সব সময়ই একটা অবস্থানে আলোচনা করে থাকি। 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে বেঁচে যাওয়া ইহুদীদের অবস্থা

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হলোকাস্টে প্রায় ৭০ লক্ষ ইউরোপীয় ইহুদী নিহত হয়েছিল। ১৯৪৫ সালের ৮মে মিত্রশক্তির বিজয়ের পরে, নির্যাতনের স্বীকার ও মৃত্যু শিবিরে বেঁচে থাকা অনেক ইউরোপীয় ইহুদীদের আর কোথাও যেতে হয়নি।

যুদ্ধে কেবল ইউরোপকে ব্যবহারিকভাবেই ধ্বংস করা হয়নি, অনেক বেঁচে যাওয়া ভুক্তভোগী ইহুদী, পোল্যান্ডে বা  জার্মানিতে অবস্থিত যুদ্ধ-পূর্ববর্তী তাদের বাড়িতে আর কখনো ফিরে যেতে চায়নি । সে সময় প্রকৃতপক্ষেই ইহুদীরা বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিতে পরিনত হয়েছিল এবং এদেরকে ডিপি (Displaced Persons) হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়েছিল সে সময়। 

মিত্র বাহিনী ১৯৪৫ সালে জার্মানদের থেকে ইউরোপকে মুক্ত করার সময় নাৎসি কন্সেন্ট্রেশন ক্যাম্পগুলিকেও মুক্ত করে দেয়। এই কন্সেন্ট্রেশন ক্যাম্পে কয়েক ডজন থেকে হাজার হাজার বেঁচে যাওয়া ইহুদীদের অবস্থা দেখে মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা সম্পূর্ণ হতবাক হয়ে গিয়েছিল।

নাৎসি বাহিনীর অত্যাচারের ধরন দেখে অভিভূত হয়েছিল তারা। প্রায় সব ভুক্তভোগীই প্রচন্ড রোগা এবং মৃত্যুর খুব কাছে চলে গিয়েছিল।

শিবিরগুলি মুক্ত করার পরে সৈন্যরা যা পেয়েছিল তার একটি নাটকীয় উদাহরণ ডাকাউতে ঘটেছিল। যেখানে, জার্মানরা পালিয়ে যাওয়ার সময় ৫০ বগী সম্বলিত একটি ট্রেনকে রেলপথে রেখেই চলে যায়। এ ট্রেনটি বেশ কয়েকদিন ধরেই এই রেলপথে আটকে ছিল।

এর প্রতিটি বগীতে প্রায় ১০০ জন করে বন্দী ছিল এবং মিত্র বাহিনী যখন এই ট্রেন আটক করে, তখন ট্রেনের ৫,০০০ বন্দীদের মধ্যে প্রায় ৩,০০০ বন্দী ইতিমধ্যে মারা গিয়েছিল। যুদ্ধ পরবর্তী দিনগুলোতে হাজার হাজার “বেঁচে থাকা” ইহুদী বন্দী মারা যায় এবং সামরিক বাহিনী নিহতদের স্বতন্ত্রভাবে এবং গণকবরে সমাহিত করেছিল।

Jewish_protest_demonstrations_against_Palestine_White_Paper,King_George_Ave,_Jerusalem

ক্ষতিগ্রস্থ ইহুদীদের তত্ত্বাবধান এবং চিকিৎসার জন্য অনেক চিকিৎসককে ক্যাম্পে আনা হয়েছিল। ইহুদীদের নিয়মিত খাবার সরবরাহের বাবস্থা করা হয়েছিল কিন্তু শিবিরগুলির পরিস্থিতি ছিল একেবারেই ভয়াবহ। এতদসত্তেও প্রতিনিয়ত তাদের মৃত্যু ঘটছিল।

কন্সেন্ট্রেশন ক্যাম্পগুলি মুক্ত করার সময় দেখা যায়, আশেপাশের এসএসের বাসস্থানগুলিকে হাসপাতাল হিসাবে ব্যবহার করা হতো।

হলোকাস্ট পরবর্তী সময় এতো কষ্ট ভোগের পরেও, জীবিত ইহুদীদের আত্মীয়দের সাথে যোগাযোগ করতে দেয়া হতো না। বেঁচে যাওয়া লোকেদের ছোট ছোট বাঙ্কারে একসাথে গাদাগাদি করে ঘুমাতে বাধ্য করা হয়েছিল, তাদেরকে আলাদা ধরনের ইউনিফর্ম পরতে বাধ্য করা হয়েছিল এবং ক্যাম্পগুলি ছাড়তে তাদের কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

সেনাবাহিনী যুক্তি দিয়েছিল যে হলোকাস্টের বেঁচে থাকা ব্যক্তিরা (বর্তমানে মূলত তাদের বন্দীরা) তাদের নিজেদের গ্রামাঞ্চলে ঘোরাফেরা করতে পারবেন না। কারন হিসেবে তারা বলেছিল, বেঁচে যাওয়া ইহুদীদের অনেকেই মানুশিকভাবে বিপর্যস্ত এবং এরা যে কোন সময় বেসামরিক নাগরিকদের উপর আক্রমণ করতে পারে। 

আর্ল জি হ্যারিসনের (Earl G Harrison) তদন্ত 

১৯৪৫ সালের জুন মাসে, হলোকাস্ট থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা হচ্ছে এমন কথা ওয়াশিংটনে পৌঁছে যায়।

প্রেসিডেন্ট হ্যারি এস ট্রুম্যান সেনাবাহিনীর এ ধরনের কার্যকলাপে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন এবং পেনসিলভেনিয়া ল(Law) বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন আর্ল জি হ্যারিসনকে, ডিপি ক্যাম্পগুলো তদন্তের জন্য ইউরোপে যাবার নির্দেশ দেন। হ্যারিসন এ ক্যাম্পগুলোতে যে পরিস্থিতি দেখতে পেয়েছিলেন তাতে তিনি হতবাক হয়ে যান।

তিনি তার বিবৃতি তে বলেছিলেন-  “পরিস্থিতি যেমন দাঁড়িয়েছে যে, নাৎসিরা তাদের সাথে যে আচরন করতো, শুধুমাত্র ইহুদিদের হত্যা করা ছাড়া এখানকার সেনারা একই রকম আচরণ তাদের সাথে করছে। তিনি বলেছিলেন, আমরা কি নাজি নীতি অনুসরণ করছি না তাদের সমবেদনা জানাচ্ছি? 

হ্যারিসন, প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যানের কাছে অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে সুপারিশ করেছিলেন যে, কমপক্ষে ১,০০,০০০ ইহুদীকে, ইংল্যান্ড শাসিত তৎকালীন ফিলিস্তিনে প্রবেশের অনুমতি দেয়ার।

হ্যারিসনের এ ধরনের মতামতের পরে, প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্লেমেন্ট অ্যাটির সাথে এই সুপারিশের ভিত্তিতে যোগাযোগ করেছিলেন কিন্তু ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এতে হতাশা প্রকাশ করেন এবং বলেন, ইহুদীদের মধ্য প্রাচ্যে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হলে আরব দেশগুলির সাথে ঝামেলা হয়ে যাবে।

মূলত তিনি তেল নিয়ে সমস্যা হতে পারে ভেবে ভয় পেয়েছিলেন। তবে তিনি ডিপিদের (ক্ষতিগ্রস্থ ইহুদীদের) বর্তমান অবস্থা তদন্তের জন্য যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্র সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করেন। অ্যাংলো-আমেরিকান এ কমিটির নাম দেয়া হয় “কমিটি অফ ইনকয়েরিটি” (Committee of Inquirity) ।

১৯৪৬ সালের এপ্রিলে এ কমিটি তাদের প্রতিবেদনে হ্যারিসনের প্রতিবেদনের সাথে একমত পোষণ করে এবং ১,০০,০০০ ইহুদীকে ফিলিস্তিনে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার সুপারিশ করেন।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী অ্যাটলির প্রস্তাব

Jewish_refugees
Jewish_refugees

তবে অবাক করা বিষয় হল, প্রধানমন্ত্রী অ্যাটলি সেই প্রস্তাবটিকে উপেক্ষা করেন, এবং তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে প্রতি মাসে ১,৫০০ ইহুদিকে প্যালেস্টাইনে পাড়ি জমানোর অনুমতি দেওয়া হবে।

১৯৮৮ সালে প্যালেস্টাইনে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হওয়া অবধি, প্রতি এক বছরে ১৮,০০০ ইহুদী প্যালেস্টাইনে যাবে, এবং শেষ পর্যন্ত এই কোটা অব্যাহত ছিল। 

হ্যারিসনের প্রতিবেদনের পরে রাষ্ট্রপতি ট্রুমান ডিপি ক্যাম্পগুলিতে ইহুদিদের চিকিত্সার ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার আহ্বান জানান। ইহুদীরা, সে সময় যারা ডিপি ছিলেন তাদের নিজের দেশের মতোই মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল।

জেনারেল আইজেনহোয়ার, ট্রুমানের অনুরোধ মেনে  শিবিরগুলোতে নতুন পরিবর্তন আনয়ন করতে শুরু করেন এবং এ পদক্ষেপের ফলে বন্দী ক্যাম্পগুলো আরও মানবিক হয়ে ওঠে।

শিবিরগুলোতে ইহুদীদের একটি পৃথক গ্রুপ তৈরি করে দেয়া হয়েছিল, ফলে ইহুদীদের মিত্র বন্দীদের সাথে আর থাকতে হয়নি যারা কিছু ক্ষেত্রে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প গুলিতে কর্মী বা এমনকি রক্ষী হিসাবে কাজ করেছিল। ডিপি ক্যাম্পগুলো পুরো ইউরোপ জুড়েই ছড়িয়ে ছিল। এবং সব ক্যাম্পগুলোতেই ইহুদীরা একই ধরণের সুবিধা পেতো। 

যুদ্ধ পরবর্তী ইহুদী পুনর্বাসন

A PROTEST RALLY AGAINST THE DEPORTATION OF “ILLEGAL IMMIGRANTS” TO CYPRUS BY THE BRITISH AUTHORITIES, HELD OUTSIDE THE “HABIMA” THEATRE IN TEL AVIV.

যুদ্ধের শুরুতে প্রায় দেড় লক্ষ পোলিশ ইহুদী সোভিয়েত ইউনিয়নে পালিয়ে যায়। ১৯৪৬ সালে এই ইহুদিদের পোল্যান্ডে প্রত্যাবাসন করা শুরু হয়েছিল। কিন্তু ইহুদীরা পোল্যান্ডে থাকতে না চাওয়ার যথেষ্ট কারণ দেখিয়ে তাদের দেশত্যাগ করাতে ঊর্ধ্বতনদের রাজি করেছিল।

১৯৪৬ এবং ১৯৪৭ সালে ইউরোপের প্রচণ্ড শীতের মধ্যে, সমগ্র ইউরোপে প্রায় ২.৫ লক্ষ ডিপি মানবেতর জীবন কাটাতে বাধ্য হয়েছিলো। 

এ সকল বিষয়গুলি প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যানকে নতুনভাবে ভাবিয়ে তোলে। ট্রুমান যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইন শিথিল করেন এবং হাজার হাজার ডিপিকে (ইহুদীকে) আমেরিকাতে নিয়ে আসেন। অগ্রাধিকার প্রাপ্ত অভিবাসীরা ছিল এতিম শিশু। ১৯৪৬ থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত, ১০ লক্ষেরও বেশি ইহুদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমায়।

এ সকল ঘটনার পাশাপাশি, আর একটি ঘটনা ঘটতে চলেছিল, আর সেটা হল, আন্তর্জাতিক চাপ এবং মতামতে প্রভাবিত হয়ে ব্রিটেন ১৯৪৭ সালের ফেব্রুয়ারীতে প্যালেস্টাইন বিষয়টিকে জাতিসংঘের কাছে হস্তান্তর করে। ১৯৪৭ সালে, জাতিসংঘের জেনারেল অ্যাসেম্বলি ফিলিস্তিনকে বিভক্ত করার পক্ষে ভোট দেয়।

এ সিদ্ধান্তের পরপরই প্যালেস্টাইনে ইহুদী এবং আরবদের মধ্যে তৎক্ষণাত যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। এ অবস্থার পরেও জাতিসঙ্ঘের সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও ব্রিটেন যতক্ষণ পারত প্যালেস্টাইনে তাদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছিল। ফিলিস্তিনে ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণ ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।

তবে এ অভিবাসন আইন বাস্তবায়নে ইহুদীদের অনেক বাধার সম্মুখিন হতে হয়েছে। এর মুল কারন ছিল ব্রিটেনের জটিল অভিবাসন প্রক্রিয়া। ইহুদীদের প্রথমে ইতালিতে স্থানান্তরিত করা হতো,(তারা প্রায়শই পায়ে হেঁটে যেত)। ইতালি থেকে ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ফিলিস্তিনে যাওয়ার জন্য জাহাজ ভাড়া করা হতো।

কিছু জাহাজকে প্যালেস্টাইনে অবস্থানরত ব্রিটিশ নৌ অবরোধ পেড়োতে হতো। এর মধ্যে কিছু জাহাজকে বন্দী করা হয়েছিলো এবং জাহাজের যাত্রীদের সাইপ্রাসে নামিয়ে দেয়া হতো।

১৯৪৬ সালের আগস্টে ব্রিটিশ সরকার সাইপ্রাসের শিবিরে সরাসরি ডিপি(ইহুদী) প্রেরণ করা শুরু করে। সাইপ্রাসে পাঠানো ডিপিরা তখন প্যালেস্তাইনে আইনী অভিবাসনের জন্য আবেদন করতে সক্ষম হন। ব্রিটিশ রয়েল আর্মি সাইপ্রাস দ্বীপের শিবিরগুলো চালাত। ডিপি ক্যাম্পগুলোতে সশস্ত্র টহল বলবত ছিল, যাতে ডিপিরা পালাতে না পারে।

সাইপ্রাস দ্বীপে ১৯৪৬ থেকে ১৯৪৯ সালের মধ্যে বাইশ হাজার ইহুদিকে রাখা হয়, এবং সেখানেই তারা একটি সংগঠন তৈরি করে অভ্যুত্থান ঘটায়। সে সময় এ ক্যাম্পে ২,২০০ শিশু জন্মগ্রহণ করেছিল।

ইহুদী সংগঠনটি সাইপ্রাসে শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। পরবর্তীতে সাইপ্রাসের ইহুদী সংগঠনের নেতারা  ইস্রায়েলের নতুন রাজ্যের প্রাথমিক সরকারী কর্মকর্তায় পরিণত হন।

এসব ঘটনাগুলো বিশ্বজুড়ে ডিপিদের জন্য উদ্বেগকে আরও বাড়িয়ে তোলে। অনেক সময় ডিপিদের ইসরাইলে পাঠানোর জন্য জাহাজে তোলা হলেও নানা বাধার মুখে জাহাজকে আবার জার্মানিতে ফিরে আসতে হতো। এরকম একটি ঘটনা ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বরে ঘটেছিল।

এ সকল প্রেক্ষাপট প্রেসিডেন্ট ট্রুমান এবং বিশ্বের অনেক নেতাদের একটি কার্যকরী সমাধানের জন্য ভাবনায় ফেলে দেয় এবং তারা বুঝতে পেরেছিল যে একটি ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা দরকার।

ইহুদী রাষ্ট্র গঠন

১৯৪৮ সালের ১৪ ই মে ব্রিটিশ সরকার প্যালেস্টাইন ছেড়েছিল এবং একই দিন ইস্রায়েল রাষ্ট্র ঘোষিত হয়েছিল। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রই প্রথম দেশ যারা নতুন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়।

১৯৫০ সালের জুলাই পর্যন্ত ইস্রায়েলি সংসদ, নেসেট “রিটার্ন আইন” (যা কোনও ইহুদীকে ইস্রায়েলে পাড়ি জমান এবং নাগরিক হওয়ার অনুমতি দেয়) অনুমোদন না দিলেও আইনী অভিবাসন প্রক্রিয়া বেশ ভালভাবেই শুরু হয়েছিল।

আরব দেশগুলোর প্রচন্ড বাঁধা সত্ত্বেও ডিপিদের ইস্রায়েলে অভিবাসন দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ইস্রায়েল সৃষ্টির প্রথম দিন, অর্থাৎ ১৯৪৮ সালের ১৫ই মে, ১,৭০০ অভিবাসী এখানে পাড়ি জমায়। ১৯৪৮ সালের মে থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি মাসে গড়ে ১৩,৫০০ করে অভিবাসী আসতে থাকে।

ব্রিটিশরা এ সংখ্যা যদিও প্রতি মাসে ১,৫০০ নির্ধারণ করেছিল তথাপি ইসরায়েলে ইহুদী আগমনের হার ছিল এর চেয়ে অনেক বেশি।

শেষ পর্যন্ত, হলোকাস্টের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা ইস্রায়েল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা অন্যান্য দেশের আশ্রয়ে চলে যেতে সক্ষম হয়েছিল। মূলত প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যান এর বড় ভুমিকা ছিল ইহুদীদের একটি সফল প্রতাবাসনের প্রতি। হয়তো বর্তমান ইস্রায়েল অনেক বিতর্কিত ভুমিকা অনেক সময় পালন করে।

কিন্তু হলকাস্টের পরে ইহুদীদের জীবন খুব একটা সহজতর ছিলনা। এক সময়কার আশ্রয়হীন জাতি আজ পৃথিবীর সবচেয়ে মেধাবী জাতি হিসেবে স্বীকৃত। 

 

তথ্যসুত্রঃ- https://en.wikipedia.org/wiki/History_of_the_Jews_in_the_United_States

www.throughtco.com

 

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top