corona_virus

নভেল করোনা ভাইরাস (korona virus) সৃষ্টির ইতিহাস এবং আক্রান্ত চীন

হিউম্যান করোনা ভাইরাস (korona virus), ১৯৬০ এর দশকে প্রথম চিহ্নিত করা হয়েছিলো। সে সময়ের প্রথম দিকে শিশুদের শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের প্রভাব প্রথমিক ভাবে পরিলক্ষিত হয় এবং এর জন্য যথেষ্ট পরিমাণে দায়ী ছিল এ ভাইরাস, কিন্তু প্রথমে কেউ এটা বুঝতে পারেনি।

২০০৩ সাল থেকে, ভাইরাসটি গুরুতর তীব্র আকার ধারন করে। শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ থেকে শুরু হওয়া  এ করোনা ভাইরাসের কমপক্ষে ৫ টি নতুন প্রজাতি এখন পর্যন্ত সনাক্ত করা হয়েছে। সে সময় এ সকল মানব করোনা ভাইরাস বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানুষের শারীরিক দুর্বলতা এবং মৃত্যুর কারণ হয়েছিল। এনএল-৬৩, নতুন চিহ্নিত একটি ভাইরাস গ্রুপ ছিল যা করোনা ভাইরাস পরিবারকে প্রতিনিধিত্ব করছে।

 

এছাড়া এদের মধ্যে এনএল (NL) এবং নিউ হ্যাভেন (New Haven) নামে দুই ধরণের করোনা ভাইরাস রয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী বেশ পরিচিত। এই ভাইরাসগুলো শ্বসনতন্ত্রের রোগের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত।

একটি নতুন চিহ্নিত গ্রুপ II করোনভাইরাস, এইচকিউ-১ (HKU1) এখনো বিশ্বব্যাপী তেমন একটি পরিচিতি লাভ করেনি। করোনা ভাইরোলজি গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে অনেক এগিয়েছে। করোনা ভাইরাসের (korona virus) বিস্তৃত গবেষণা, এর পটভূমি এবং ইতিহাস এখানে আলোচনা করা হল। 

 

মানব করোনা ভাইরাসের (korona virus) ইতিহাস

মানব করোনা ভাইরাসের (korona virus) ইতিহাস শুরু হয়েছিল ১৯৬৫ সালে, যখন টাইরেল এবং ব্যনো নামে দুই জন বিজ্ঞানি এ ভাইরাসটি আবিষ্কার করেছিলেন। প্রথমে তারা বি-৮১৪  নামক একটি ভাইরাস আবিষ্কার করেন। সে সময় সর্দিতে আক্রান্ত একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শ্বাস প্রশ্বাস ট্র্যাক করে এ ভাইরাসটির লক্ষন প্রকাশ করা হয়।

একটি সংক্রামক জীবাণুর উপস্থিতি মানব দেহের মধ্যে অন্তর্নিহিতভাবে একটি ইনোকুলেশনের মাধ্যমে প্রদর্শিত হয়েছিল। যদিও টাইরেল এবং ব্যনো সে সময় মানব টিস্যুগুলোতে জীবাণুর প্রভাব কিভাবে বৃদ্ধি পায় সেটা প্রমান করতে পারেনি।

 

প্রায় একই সময়ে, হাম্রে এবং প্রোকনউ নামে দুই জন ভাইরোলজিস্ট, সর্দিজনিত রোগীদের চিকিত্সার সাথে জড়িত ডাক্তারদের নিকট থেকে প্রাপ্ত কিছু নমুনা নিয়ে একটি ভাইরাস জন্মাতে সক্ষম হয়েছিল। বি-৮১৪ নামে এ ভাইরাসটিকে তারা উভয়েই ২২৯-ই নাম দিয়েছিলেন। ধারণা করেছিলেন এটি অতিমাত্রায় সংবেদনশীল এবং সম্ভবত এটি সংক্রামক রোগের জন্য বিশেষভাবে দায়ী।

ভাইরাসটি কোনও পরিচিত মাইক্সো- বা প্যারামাইক্সো ভাইরাসের সাথে সম্পর্কিত ছিল না।

 

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ-এর বিজ্ঞানী রবার্ট চ্যানক গবেষণাগারে কাজ করার সময়, টাইরেল এবং ব্যনোর অনুরূপ কৌশল ব্যবহার করে মানব শ্বাস প্রশ্বাসের ট্র্যাকিং থেকে এ ভাইরাসের উপস্থিতির কথা জানিয়েছেন। এই ভাইরাসগুলি মানুষের অঙ্গ এবং তাদের বিভিন্ন কর্ম পদ্ধতির সাথে সাথে বেড়ে ওঠে।

এছাড়া একই সময়ে আলমেডা এবং টাইরেল করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি সম্পর্কে অবগত ছিলেন। 

 

১৯৬০ এর দশকের শেষদিকে, টাইরেল মানবদেহের ভাইরাস এবং বেশ কয়েকটি প্রাণী ভাইরাস নিয়ে কাজ করে এমন একাধিক ভাইরাসবীদেরকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। বিজ্ঞানীদের এ দলটি মানব করোনা ভাইরাসের (korona virus) উপর বেশ কয়েকটি পরীক্ষা চালান। 

 

তারা সেরোলজিক কৌশল ব্যবহার করে এ ভাইরাস সম্পর্কে বেশকিছু ধারণা লাভ করেন। চলমান গবেষণায় দেখা গিয়েছিলো মানব শ্বসনীয় করোনা ভাইরাসগুলি মহামারীর সাথে যে যথেষ্ট পরিমাণে সম্পর্কিত। প্রাপ্ত তথ্য থেকে দেখা যায়, শীতকালীন জলবায়ুতে, করোনা ভাইরাসের (korona virus) সংক্রমণ গ্রীষ্ম এবং শরত্কালের চেয়ে অনেক বেশি হয় এবং বসন্তের দিকে এ ভাইরাসের সংক্রমণ প্রায়শই ঘটে।

আরও জানা গিয়েছে যে মহামারীকালে করোণা ভাইরাসের সংক্রমণ মোট শ্বাসযন্ত্রের ক্ষতির ক্ষেত্রে প্রায় ৩৫% অবদান রাখে। 

 

আবিষ্কারের ৩ দশক পরে বিজ্ঞানীরা করোনা ভাইরাস সম্পর্কে অতি মাত্রায় উৎসাহী হয়ে ওঠে এবং পূর্বে আবিষ্কৃত বিষয়গুলো ছাড়াও এ ভাইরাসের নতুন কিছু বৈশিষ্টের দিকে আলোকপাত করে, এবং চলমান পরীক্ষা কার্যক্রম জোরদার করে।

এ সময় তারা একটা বিষয় খুঁজে পায়, সেটা হল ভাইরাসগুলি বাচ্চাদের হাঁপানির সংক্রমণের পাশাপাশি প্রাপ্তবয়স্কদের এবং বেশি বয়স্কদের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী ব্রঙ্কাইটিস তৈরি করতে সক্ষম ছিল। 

চীনা খাদ্যাভ্যাস
চীনা খাদ্যাভ্যাস

মানুষ যখন গবেষণাগারে মানব করোনা ভাইরাসগুলোর ফলে সৃষ্ট রোগ এবং মহামারী অন্বেষণে এগিয়ে চলেছিল, তখন প্রাণী করোন ভাইরাসের সংখ্যা এবং গুরুত্ব দ্রুত বাড়ছিল। পরবর্তীতে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে বলা হয়েছিল যে ইঁদুর, মুরগি, টার্কি, বাছুর, কুকুর, বিড়াল, খরগোশ এবং শূকর সহ একাধিক প্রাণী প্রজাতির রোগের কারণের জন্য করোনা ভাইরাস দায়ী।

 

এর ফলে রোগাক্রান্ত বিভিন্ন প্রাণীর উপর পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু হয়, তাদের শ্বাসযন্ত্রের রোগ গুলোতে ফোকাস করা শুরু হয়েছিলো এবং গবেষণা শুধু এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। ভাইরোলজিস্টগন ইঁদুরের গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস, হেপাটাইটিস এবং এনসেফালাইটিসের মতো রোগ গুলোর দিকে নজর রাখছিলেন।

এছাড়া ইঁদুরের নিউমোনাইটিস এবং বিড়ালের দেহের সংক্রামক ভাইরাস পেরিটোনাইটিসের দিকেও খেয়াল রাখছিলেন। বিশেষত বিড়ালের পেরিটোনাইটিস ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট এনসেফালাইটিসের সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের আগ্রহ ছিল তুঙ্গে।

 

২০০২-২০০৩ সালের করোনা ভাইরাসের প্রকৃতি

করোনা ভাইরাসের বিচিত্র আচরণ দেখে আসলে আমাদের অবাক হওয়ার কিছু ছিল না, কারন ২০০২-২০০৩ সালে্র দিকে চীনের দক্ষিণ-অঞ্চলে করোনা ভাইরাস প্রথম বিস্তৃত একটি চেহারা নিয়ে আত্মপ্রকাশ করে।

প্রচণ্ড গতিতে ভাইরাসটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে, যা সে সময় সারস (SARS) নামে পরিচিত ছিল এবং বিশ্বব্যাপী প্রায় ৮০০ মানুষকে হত্যা করেছিল এ ভাইরাসটি। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট হওয়া এবং দীর্ঘ মেয়াদী শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন লক্ষণ সে সময় দেখা দিয়েছিলো।

 

২০০২-২০০৩ সালে রোগের প্রাদুর্ভাবের সময় উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, ইউরোপ এবং এশিয়ার ২৯ টি দেশে সারস (SARS) সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছিলো।

সে সময় সামগ্রিকভাবে মোট ৮০৯৮ জন সংক্রামিত ব্যক্তিকে সনাক্ত করা হয়েছিল, যার মধ্যে ৭৭৪ জন মানুষ সারস-সংক্রান্ত ভাইরাসের কারনে প্রাণ হারায়। এখনও একটি কারন খুব একটা স্পষ্ট নয় যে কীভাবে ভাইরাসটি এতোগুলো দেশের বিপুল জনসংখ্যায় প্রবেশ করেছিল।

 

প্রথম দিকে যে জায়গাগুলিতে সারস ভাইরাসের মহামারী শুরু হয়েছিল সেই অঞ্চলের খাদ্য বাজারের ব্যাবসায়ীদের উপর একটি স্টাডি পরিচালনা করা হয়েছিল। এ সময় পরীক্ষক টিম কৌতূহল তৈরি করতে পারে এমন একটি তথ্য পায়। তারা দেখতে পেয়েছিল এ সকল ব্যাবসায়ীদের মধ্যে ৪০% বন্য প্রাণী ব্যবসায়ী এবং ২০% ব্যক্তি যারা পশু জবাই করে এমন কাজের সাথে সরাসরি জড়িত ছিল।

 

এ অনুসন্ধান প্রমাণ করে যে এই ব্যক্তিরা তাদের নিজেদের অজান্তে একটি সারস-জাতীয় ভাইরাসের সংস্পর্শে এসেছিল যা প্রায়শই ভয়াবহ সংক্রমণ ঘটাতে সক্ষম। 

 

করোনা ভাইরাসের সাম্প্রতিক সংক্রমণ

Coronaviruses_004_lores.jpg
Corona viruses

ধারণা করা হচ্ছে, গত বছরের শেষদিকে চীনা শহর উহানের একটি  বাজার থেকে মানব দেহে করোনা ভাইরাসটি ছড়িয়েছিল। এবং এর জন্য ঐ বাজারের কিছু ব্যাবসায়ী, যারা অবৈধভাবে বন্যজীবন বিক্রির জন্য সরাসরি দায়ী।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এটি সম্ভবত উদ্ভিদের থেকে উদ্ভূত হয়েছিল এবং পরে মানুষের কাছে পৌঁছেছে, এবং এটা সম্ভবত অন্য কোন প্রাণী প্রজাতির মাধ্যমে ছড়িয়েছে।

 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)) ডিসেম্বরের শেষের দিকে উহানের বেশ কয়েকটি নিউমোনিয়ার কেস সম্পর্কে স্থানীয় প্রতিনিধিদের সতর্ক করেছিল। এর এক সপ্তাহ পরে চীনা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে যে তারা একটি নতুন ভাইরাস সনাক্ত করেছে। 

 

প্রাথমিকভাবে জানা যায়, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের প্রথম দিকে প্রথম মানব সংক্রমণটি ঘটেছিলো। এবং এ করোনা ভাইরাসের নাম করণ করা হয়েছে নভেল করোনা ভাইরাস হিসেবে। 2019-nCoV (নভেল করোনা ভাইরাস) এর প্রাদুর্ভাব প্রথম, ডিসেম্বর ২০১৯ এ মধ্য চীনের উহান শহরে সনাক্ত করা হয়েছিল। 

 

জিনোমের উপর ভিত্তি করে একটি ফাইলেজেনেটিক গবেষণায় দেখা যায় যে প্রথম সংক্রমণটি সম্ভবত কোন সংক্রামিত প্রাণীর থেকে হয়েছিল। পরে ভাইরাসটি চীনের অন্যান্য সমস্ত প্রদেশে এবং এশিয়া, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা এবং ওশেনিয়ার বিশ টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

 

৩১ জানুয়ারী ২০২০ এর মধ্যে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৯,৭৭৬ টি নিশ্চিত হওয়া গেছে, যার মধ্যে ৯,৬৫৮ জন চীনের মূল ভূখণ্ডের মধ্যে, এবং বাকি আক্রান্ত ব্যাক্তিরা অন্যান্য দেশের। সাধারণত, চীনের বাইরে যারা আক্রান্ত হয়েছে, তারা এমন ব্যাক্তি যারা হয় উহান থেকে ভ্রমণ করেছেন, বা ঐসব অঞ্চল থেকে ভ্রমণ করেছেন এমন কোনও ব্যক্তির সাথে সরাসরি যোগাযোগ করেছিলেন।

৩১ জানুয়ারি ২০২০ পর্যন্ত সময়ে এ ভাইরাসের ফলে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২১৩ জন। ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি প্রথম চীনের গুয়াংডংয়ে এক মানবদেহ থেকে অন্য মানবদেহে যে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পরছে সে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছিল, এবং এর পরে জার্মানি, তাইওয়ান, জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে বিষয়টি নিশ্চিত হয়।

 

৩০ জানুয়ারী ২০২০, 2019-nCoV (নভেল করোনা ভাইরাস) কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বের জন্য স্বাস্থ্য হুমকি উল্লেখ করে জরুরী পরিস্থিতি হিসাবে ব্যাখ্যা করেছে। এবং একে তীব্র শ্বাসযন্ত্রের রোগ” হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

 

ভাইরাসটি কতটা মারাত্মক?

বিজ্ঞানীরা করোনাভাইরাসকে (korona virus) 2019-nCoV হিসাবে চিহ্নিত করে একে একটি ভাইরাস পরিবারের নতুন সদস্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এর ফলে সাধারণ সর্দি এবং আরও গুরুতর রোগ যেমন তীব্র শ্বাসযন্ত্রের পীড়া এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।

 

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট হওয়া এবং দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে।

 

নতুন ভাইরাসটি কতটা মারাত্মক তা এখনো স্পষ্ট নয়। যদিও গুরুতর কিছু ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে, তবে এ ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যাক্তির হালকা কোন প্রকার রোগ সনাক্ত করা যায় না। এ পর্যন্ত যারা মারা গিয়েছেন তাদের অনেকেই বয়স্ক ছিলেন, এবং তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়েছিল।

 

ভাইরাসটি কীভাবে স্থানান্তরিত হয় এবং কীভাবে এটি প্রতিরোধ করা যায়?

নতুন করোনা ভাইরাসটি সাধারণত এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে সংক্রমণ হতে পারে, যদিও এটি বাস্তবে কিভাবে ঘটে তা পরিষ্কার নয়। এখন অবধি বেশিরভাগ কেস গুলোই চীনের উহানে ঘটেছে, এবং আক্রান্ত ব্যক্তি, তাদের পরিবারের সদস্য ও  চিকিত্সক কর্মীরা এর মধ্যে রয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা হল উহানে আসলে কি ঘটছে তা বাকি বিশ্বের কাছে চীনারা গোপন রেখেছে।

 

তবে, কাশি বা হাঁচি থেকে বাতাসের মাধ্যমে সংক্রামিত ব্যক্তির সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের মাধ্যমে বা কোনও সংক্রামিত ব্যক্তির সাথে বা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করে এবং তার মুখ, নাক বা চোখ স্পর্শ করার মাধ্যমে সম্ভবত সংক্রমণগুলো ঘটছে।

 

সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস করার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, পরামর্শ দিয়েছে যে, মানুষ যেন ঘন ঘন হাত ধোয়া, হাঁচি বা কাশির সময় তাদের মুখ এবং নাক ঢেকে রাখে এবং যারা অসুস্থ তাদের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এড়িয়ে চলে।

 

ইউএস সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনস (The US Centers for Disease Control and Prevention) বলেছে যে যারা গত বেশ কয়েকদিন ধরে চীনে রয়েছেন এবং যাদের কাশি ও জ্বরের মতো লক্ষণ দেখা দিয়েছে, তাদের অতিঃসত্তর পরীক্ষার প্রয়োজন কিনা তার জন্য পেশদার স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করা উচিত।

 

এখন পর্যন্ত চিহ্নিত আক্রান্তদের বেশিরভাগই চীনের উহান ও তার আশেপাশের অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। অন্যান্য যেসব দেশে ভাইরাসটি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, কম্বোডিয়া, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, মালয়েশিয়া, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভিয়েতনাম প্রভৃতি।

 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা উহানের বাইরে যেকোনো ব্যক্তির স্থানান্তরের বিষয়টি খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

 

চীন সরকার ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়া এবং থামানোর জন্য উহানকে ভার্চুয়ালি পৃথক রেখেছে। বেশ কয়েকটি বিদেশী সরকার চীনে অ-প্রয়োজনীয় ভ্রমণের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এবং উহান থেকে তাদের নাগরিকদের সরিয়ে নেয়া শুরু করেছে।

 

সম্প্রতি কিছু বাংলাদেশী নাগরিক যারা চীনের উহানে আটকা পরেছিলেন, তাদের বিশেষ বিমানে করে দেশে নিইয়ে আসা হয়েছে এবং নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে এ ভাইরাস মোকাবেলা করার জন্য উল্লেখযোগ্য অনেক কর্মসূচী গ্রহণ করেছে।

তথাপি আমাদের সকলের বেশ কিছু দায়িত্ব রয়েছে করোনা ভাইরাস (korona virus) সহ সকল প্রকার রোগ থেকে রক্ষা পাবার জন্য। আর আমাদের এ দায়িত্বগুলো যথাযথ ভাবে পালন করা উচিৎ।

 

 

তথ্যসুত্রঃ- https://www.livemint.com/news/world/coronavirus-symptoms-coronavirus-origin-how-coronavirus-is-spread-coronavirus-prevention-11580346313095.html

https://journals.lww.com/pidj/fulltext/2005/11001/history_and_recent_advances_in_coronavirus.12.aspx

https://www.health.gov.au/health-topics/novel-coronavirus-2019-ncov

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top