ভারতীয় উপমহাদেশ প্রায় ৫০০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কালের বিবর্তনে গড়ে ওঠা জটিল কিছু সভ্যতার আবাসস্থল। শতাব্দীর পরম্পরায় উপনিবেশবাদ এ অঞ্চলের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটির একটি সমৃদ্ধ এবং আকর্ষণীয় ইতিহাস রয়েছে। প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে সিন্ধু সভ্যতা (Indus Civilisation) এবং এটি হরপ্পান সভ্যতা নামেও পরিচিত। এটি ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীনতম প্রথম নগর সংস্কৃতি।
১৯২২ সালে পাঞ্জাব অঞ্চলের হরপ্পায় এবং পরে সিন্ধু নদীর নিকটে মহেঞ্জো-দারো (মহেঞ্জোদারো) তে সভ্যতাটি প্রথম চিহ্নিত হয়েছিল। উভয় সাইট বর্তমান পাকিস্তানের পাঞ্জাব এবং সিন্ধু প্রদেশ অবস্থিত। ১৯৮০ সালে মহেঞ্জো-দারোর ধ্বংসাবশেষ ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।
প্রাচীন সিন্ধু সভ্যতা

উনিশ শতকের কিছু অভিযাত্রী এবং বিশ শতকের প্রত্নতাত্ত্বিকেরা প্রাচীন সিন্ধু উপত্যকায় নতুন এক সভ্যতা আবিষ্কার করেছিলেন। তখন ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসটি নতুন করে লিখতে হয়েছিল। এ সময় উত্থাপিত অনেক প্রশ্নই উত্তর বিহীন থেকে যায়।
সিন্ধু সভ্যতা, মেসোপটেমিয়া, মিশর বা চীন একই ক্রম অনুসারে গড়ে ওঠা একটি প্রাচীন সভ্যতা। এই সমস্ত অঞ্চল গুরুত্বপূর্ণ কিছু নদীর উপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছিল। মিশরীয় সভ্যতা নীল নদের উপর ভিত্তি করে, এবং চীনা সভ্যতা, যেমন ইয়েলো নদীর বার্ষিক বন্যার গতিবিধির উপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছিল।
ঠিক তেমনি, প্রাচীন সিন্ধু সভ্যতা (Indus Civilisation) (হরপ্পান, সিন্ধু-সরস্বতী, বা সরস্বতী) সরস্বতী এবং সিন্ধু নদীর উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল। আপনি যদি একটু খেয়াল করেন, তবে দেখতে পাবেন, মেসোপটেমিয়া সভ্যতার রূপরেখার টাইগ্রিস এবং ফোরাত নদীর তীর ঘিরে গড়ে উঠেছিল।
মেসোপটেমিয়া, মিশর এবং চীনের জনগণের মতো সিন্ধু সভ্যতার লোকেরাও সংস্কৃতির দিক দিয়ে সমৃদ্ধ ছিলেন এবং প্রথম দিকের লেখনির উদ্ভাবনের দাবী করেছিলেন তারা। প্রকৃতপক্ষে, সিন্ধু সভ্যতা একটি প্রাচীন সভ্যতা ছিল, যা আজ পাকিস্তান এবং ভারতবর্ষের উত্তর-পশ্চিম সিন্ধু নদীর উর্বর বন্যা সমতল ভুমি এবং এর আশেপাশের অঞ্চল ঘিরে গড়ে উঠেছিল।
এই অঞ্চলে প্রাপ্ত ধর্মীয় রীতিনীতির প্রমাণগুলি প্রায় খ্রিস্টপূর্ব ৫,৫০০ সালেরও পূর্বের। কৃষিকাজের জন্য নির্মাণকৃত বসতিগুলি খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ অব্দে নির্মাণ করা হয়েছিল এবং খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ আব্দে নগরায়নের প্রথম লক্ষণ এখানে দেখতে পাওয়া যায়। খ্রিস্টপূর্ব ২৬০০ অবধি, কয়েক ডজন শহর এ অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০ থেকে ২০০০ আব্দের মধ্যে সিন্ধু সভ্যতা বিকাশের শীর্ষে পৌঁছেছিল।
সিন্ধু সভ্যতা যেভাবে আবিষ্কার হয়েছিলো

সিন্ধু সভ্যতার (Indus Valley Civilisation) ধ্বংসাবশেষ এর প্রথম আধুনিক কিছু তথ্য, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাবাহিনীর এক নির্বাসক, চার্লস ম্যাসনের বিবরন থেকে জানা যায়। ১৮২৯ সালে, ম্যাসন, কোম্পানির জন্য প্রয়োজনীয় কিছু কৌশল (বুদ্ধি) সংগ্রহের কাজে পাঞ্জাব রাজপরিবারে ভ্রমণ করেছিলেন। এই ভ্রমণের সময় অর্জিত কোনও ঐতিহাসিক নিদর্শন কোম্পানীর হাতে হস্তান্তর করা যায় কি না, সে বিষয়টি তিনি চিন্তা ভাবনা শুরু করেন।
ম্যাসন ছিলেন এমন একজন ব্যাক্তি, যিনি নিজেকে ক্লাসিক ইতিহাসে বিশেষভাবে দক্ষ করে তুলেছিলেন, বিশেষত গ্রেট আলেকজান্ডারের সামরিক প্রচারণার ভক্ত ছিলেন তিনি। পাঞ্জাবে ম্যাসনের প্রধান প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার ছিল হরপ্পা, সিন্ধু নদীর উপনদী, রাবি নদীর উপত্যকার সিন্ধু সভ্যতার (Indus Civilisation) একটি মহানগর।
ম্যাসন হরপ্পার সমৃদ্ধ ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলির প্রচুর নোট এবং চিত্র তৈরি করেছিলেন। ১৮৪২ সালে, তিনি হরপ্পার পর্যবেক্ষণগুলি আফগানিস্তান, এবং পাঞ্জাবের বেলুচিস্তানের ন্যারেটিভ অফ জার্নি (Narrative of Various Journeys in Baluchistan) বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। হরপ্পার ধ্বংসাবশেষকে রেকর্ড করা ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ের সাথে সম্পর্কিত বলে উল্লেখ করেছিলেন, তবে ভুল করে তিনি এটিকে আলেকজান্ডারের ভারতীয় উপমহাদেশ অভিযানের সময়কালের ঘটনা বলে বর্ণনা করেন।
এর দুই বছর পরে, ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর জলপথে যাত্রার সম্ভাব্যতা যাচাই করার জন্য আলেকজান্ডার বার্নসের সাথে সিন্ধু যাত্রা করার চুক্তি করেছিল। এসব প্রতিবেদন সত্ত্বেও, ১৮৪৮-৪৯ সালের দিকে, পাঞ্জাব ব্রিটিশদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পরে হরপ্পায় আরও বেশি বিপজ্জনক অভিযান চালানো হয়েছিল। পাঞ্জাবের রেললাইন স্থাপনের জন্য ট্র্যাক ব্যালাস্ট হিসাবে যথেষ্ট সংখ্যক লোককে জড়ো করা হয়েছিল তখন। ১৮৫০ এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে মুলতান ও লাহোরের মধ্যবর্তী প্রায় ১৬০ কিলোমিটার রেলপথ তৈরির কাজে হরপ্পান ইট ব্যাবহৃত হয়েছিলো।
১৮৬১ সালে, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ভেঙে যায় এবং ভারতে ক্রাউন শাসন (ব্রিটিশ রাজ পরিবারের শাসন) প্রতিষ্ঠার তিন বছর পরে, ভারতীয় উপমহাদেশের প্রত্নতত্ত্ব অনুসন্ধানের কাজ, ব্রিটিশদের তত্ত্বাবধানে ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ (এএসআই) প্রতিষ্ঠাণকে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়।
আলেকজান্ডার কানিংহাম, জরিপের প্রথম মহাপরিচালক ছিলেন, যিনি ১৮৫৩ সালে হরপ্পা পরিদর্শন করেন এবং সেখানে ইটের দেয়াল নির্মাণের বিষয়টি উল্লেখ করেণ। পরবর্তীতে তিনি আবার সেখানে জরিপ চালাতে গিয়েছিলেন, তবে এই সময়ের একটি সাইটের উপরের স্তরটি ছিন্ন হয়ে গেছে দেখতে পান।
যদিও হরপ্পাকে খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে নির্মিত হারানো বৌদ্ধ নগরী হিসাবে প্রমান করার চেস্টা হয়েছিলো। যাই হোক, কানিংহাম ১৮৭৫ সালে তার অনুসন্ধান প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলেন।
এরপরে হরপ্পায় প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপের কাজটি, ভারতের নতুন ভাইসরয় লর্ড কার্জন সম্পন্ন করেন। তিনি প্রাচীন স্মৃতিসৌধ সংরক্ষণ আইন ১৯০৪ এর আওতায় জন মার্শালকে এএসআই এর নেতৃত্বে নিযুক্ত করেণ। এর বেশ কয়েক বছর পরে, হরানন্দ সস্ত্রি, যাকে জর্জ মার্শাল হরপ্পার সমীক্ষা কাজের জন্য নিযুক্ত করেছিলেন।
তবে কাজ সঠিকভাবে না হওয়ায় ঐ একই আইনের অধীনে এএসআইয়ের পক্ষ থেকে হরপ্পাকে বাজেয়াপ্ত করে, মার্শাল ঐ সংস্থার অন্য একজন প্রত্নতাত্ত্বিক দয়া রাম সাহনিকে সাইটের দুটি অংশ খনন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
অন্যদিকে, আরও দক্ষিণে সিন্ধু প্রদেশের মূল উৎপত্তিস্থল বরাবর, মহেঞ্জো-দারোর বৃহত কাঠামোটি লক্ষ্য করেছিলেন তিনি। মার্শাল এএসআই অফিসারদের এই সাইটটি জরিপ করার নির্দেশ দেন। ১৯৩৩ সালে, মহেঞ্জো দারোতে তাঁর দ্বিতীয় সফরে, সাইটের এক কিউরেটর ব্যানারজি মার্শালকে এই সাইটটি সম্পর্কে লিখেছিলেন। এর কিছুকাল পরে, ভ্যাটস, মার্শালকে লেখা এক চিঠিতে উভয় সাইটে সিল এবং স্ক্রিপ্ট সম্পর্কে আরও বিশদভাবে বর্ণনা করেছিলেন।
এই মতামতের উপর ভিত্তি করে, জর্জ মার্শাল দুটি সাইট থেকে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এক জায়গায় একত্রীত করার আদেশ দিয়েছিল এবং ব্যানার্জি এবং সাহনিকে একটি যৌথ আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। ১৯২৪ সালের মধ্যে মার্শাল তার আবিষ্কারের তাৎপর্য সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছিলেন এবং ১৯২৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ইলাস্ট্রেটেড লন্ডন নিউজের মাধ্যমে একটি অস্থায়ী কিন্তু স্পষ্ট ভাবে জনসাধারণের কাছে প্রকাশ করেছিলেন।
আরও পড়ুনঃ- ইনকা সভ্যতা (Inca civilization) ও দক্ষিণ আমেরিকার প্রাচীন ইতিহাস
সিন্ধু সভ্যতার জীবনযাত্রা

সিন্ধু সভ্যতায় (Indus Civilisation) বিশেষত দুটি শহরকে বিশেষভাবে বিবেচনায় নেয়া হয়ে থাকে। এর নিম্ন অঞ্চল বিশিষ্ট সিন্ধুতে মহেঞ্জো-দারো এবং আরও উজানে হরপ্পা নামে দুটি নগরী প্রত্নতাত্তিক খনন কাজের সময় আবিষ্কার করা হয়।
প্রাপ্ত এ সকল প্রমাণগুলি এটাই প্রমাণ করে যে, সেখানে তাদের একটি উন্নত নগর ব্যাবস্থা এবং শৃঙ্খল জীবনযাত্রা বিদ্যমান ছিল। অনেক বাড়িতে কূপ এবং বাথরুমের পাশাপাশি বিস্তৃত ভূগর্ভস্থ ড্রেনেজ ব্যবস্থা ছিল। নাগরিকদের সামাজিক অবস্থা তুলনামূলকভাবে সুমেরিয়ায় এবং ব্যাবিলনিয়দের সমসাময়িক ছিল।
এ ছাড়া তাদের জীবন ব্যাবস্থা মিশরীয়দের চেয়ে শ্রেষ্ঠ ছিল বলে পরিলক্ষিত হয়। এই শহরগুলি একটি সুপরিকল্পিত নগরায়নের প্রস্ফুটিত রুপ প্রদর্শন করে।
সিন্ধু সভ্যতা এবং নিকট প্রাচ্যের মধ্যে কিছু স্তরের যোগাযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়। বাণিজ্যিক, ধর্মীয় এবং শৈল্পিক সংযোগগুলি সুমেরীয় দলিলগুলিতে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে, যেখানে সিন্ধু উপত্যকার মানুষকে মেলুহাইট হিসাবে এবং সিন্ধু উপত্যকাটিকে মেলুহা বলা হয়।
সিন্ধু সভ্যতায় এক ধরনের লেখার ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল যা আজও রহস্য হিসাবে রয়ে গেছে এবং এটি বোঝার সমস্ত প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে। প্রাচীন গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক সভ্যতাগুলোর মধ্যে সিন্ধু সভ্যতা সবচেয়ে কম পরিচিত হওয়ার কারণগুলির মধ্যে এটি একটি। এই লেখার পদ্ধতির উদাহরণগুলি মৃৎশিল্প, তাবিজ, খোদাই করা স্ট্যাম্প সীল এবং এমনকি ওজন এবং তামার পাত্রে পাওয়া গেছে।
এই শহরগুলির মধ্যে সম্পর্কের প্রকৃতি নিয়ে আর একটি বিষয় বিতর্ক রয়েছে। তারা স্বাধীন নগর-রাজ্য বা বৃহত্তর রাজ্যের অংশ ছিল কিনা তা সম্পূর্ণ পরিষ্কার নয়। যেহেতু সিন্ধু জনগণের লেখা অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে এবং শাসকদের ভাস্কর্য বা যুদ্ধ ও সামরিক অভিযানের চিত্রও পাওয়া যায় নি, তাই এক্ষেত্রে সঠিকভাবে কোন কিছু বর্ণনা করা খুব একটা সহজ নয়।
সিন্ধু সভ্যতার পতন

খ্রিস্টপূর্ব ১৮০০ আব্দের দিকে সিন্ধু সভ্যতার (Indus Civilisation) পতনের সূচনা হয়েছিল। এ সময়কার লেখালেখি অনেকটাই অদৃশ্য হতে শুরু করে, বাণিজ্য ও করের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত মানসম্মত ওজন এবং বিভিন্ন কাজে পরিচালিত ব্যবস্থাগুলি ব্যবহারের বাইরে চলে যায়। এ সময় কাছাকাছি জনপদের সাথে সংযোগ বিঘ্নিত হয়ে যায় এবং কিছু শহর ধীরে ধীরে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে।
এই অবস্থার কারণগুলি পুরোপুরি পরিষ্কার নয়, তবে এটি বিশ্বাস করা হয় যে, সরস্বতী নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়া, একটি অন্যতম কারন ছিল যা খ্রিস্টপূর্ব ১৯০০ সালের দিকে শুরু হয়েছিল। বেশিরভাগ ঐতিহাসিকদের মতে এটিই ছিল মূল কারণ। তবে অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা এই অঞ্চলে একটি ধ্বংসাত্মক বন্যার কথাও বলেছেন। এ সকল কারনে কৃষিকাজে বিপর্যয় নেমে আসে, অর্থনীতি তলানিতে গিয়ে ঠেকে এবং শহরগুলির নাগরিক শৃঙ্খলা একপ্রকার ভেঙে পড়ে।
খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ আব্দের দিকে, আর্যরা, যারা গবাদি পশু পালকদের একটি বিশাল যাযাবরদের দল মধ্য এশিয়া থেকে এই অঞ্চলে পাড়ি জমা। আর্যরা হিন্দু কুশের পাহাড় পেরিয়ে সিন্ধু সভ্যতার সংস্পর্শে আসে। এটি একটি বিশাল স্থানান্তর প্রক্রিয়া ছিল এবং এটাকে একটি আক্রমণ হিসাবে দেখা হত, যা সিন্ধু সভ্যতার পতনের কারণ বলে মনে করা হয়েছিল, কিন্তু এই অনুমানটি আজ পর্যন্ত সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়নি।
এভাবে সিন্ধু সভ্যতার (Indus Civilisation) অবসান ঘটে। বেশ কয়েক শতাব্দী ধরে আর্যরা ধীরে ধীরে বসতি স্থাপন শুরু করেছিল এবং কৃষিক্ষেত্র প্রস্তুত সহ এখানকার জমি অধিগ্রহণ করতে শুরু করেছিল। আর্যদের নিয়ে আসা ভাষা স্থানীয় ভাষাগুলির উপর আধিপত্য বিস্তার করতে আরম্ভ করে। দক্ষিণ এশিয়ায় আজ যে সর্বাধিক বিস্তৃত ভাষার ব্যাবহার হচ্ছে, তার উত্স ঐসব আর্য জাতি। যারা ভারতীয় উপমহাদেশে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগুলি চালু করেছিল।
আধুনিক ভারতীয় সমাজের অন্যান্য বৈশিষ্ট্য যেমন ধর্মীয় অনুশীলন এবং বর্ণ বিভাজনও আর্য অভিবাসনের সময়কালের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায়। আর্য-পূর্বের অনেক রীতিনীতি আজও ভারতে টিকে আছে। এই দাবির সমর্থনকারী প্রমাণগুলির মধ্যে রয়েছে: প্রাক-আর্য ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা; ভারতীয় সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের অনুশীলন; এবং এও সম্ভাবনা রয়েছে যে হিন্দু প্যানথিয়নের কিছু বড় দেবতা প্রকৃতপক্ষে সিন্ধু উপত্যকার সভ্যতার সময়ে উদ্ভূত হয়েছিল এবং বহু শতাব্দী জুড়ে মূল বাসিন্দারা এদের “জীবিত” রেখেছিলেন তাদের উপাসনার মধ্য দিয়ে।
তথ্যসূত্রঃ- https://en.wikipedia.org/wiki/Indus_Valley_Civilisation
https://www.history.com/news/6-civilizations-that-mysteriously-collapsed
https://www.thoughtco.com/the-indus-valley-civilization-119176
https://www.britannica.com/topic/Indus-civilization
https://www.ancient.eu/Indus_Valley_Civilization/