srilanka

শ্রীলঙ্কাঃ তথ্য এবং ইতিহাস

শ্রীলঙ্কা একটি বৃহত দ্বীপ রাষ্ট্র। ভারতের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল হতে বিচ্ছিন্ন এ দেশটি ভারত মহাসাগরে অবস্থিত। বর্তমানে এর রাজধানী শহরের নাম কলম্বো। ১৯৭২ সাল পর্যন্ত দেশটি আনুষ্ঠানিকভাবে সিলন (Ceylon) নামে পরিচিত ছিল। তবে বর্তমানে এটি সরকারীভাবে গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রি শ্রীলংকা (Democratic Socialist Republic of Sri Lanka) নামে পরিচিত।

কয়েক বছর পূর্বে দেশটির অস্থিরতা এবং জাতিগত গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের কারণে এর একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। যদিও সম্প্রতি, শ্রীলংকার সার্বিক পরিস্থিতি পূর্বের থেকে অনেক ভালো, তথাপি কিছু বিচ্ছিন্ন জঙ্গিবাদী কার্যক্রম ২০১৯ সালে দেশটির স্থিতিশীলতা প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছিলো। তবে সার্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে দেশটি বেশ সফলতার সাথে পূর্বের সহিংস পরিস্থিতিকে পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে এবং বানিজ্য, ট্যুরিজমের দিক দিয়ে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ক্রমবর্ধমান।

শ্রীলঙ্কায় বহু সংস্কৃতি, ভাষা এবং জাতিগোষ্ঠীর বাসস্থান। জনসংখ্যার সিংহভাগই সিংহলি জাতিগোষ্ঠীর, অন্যদিকে তামিলদের একটি বৃহৎ সংখ্যা (সংখ্যালঘু) দ্বীপ দেশটির ইতিহাসে প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করে চলেছে। দেশটিতে মুরস, বার্গার্স, মালয়েশিয়ান, চীনা এবং আদিবাসীদেরও দেখা যায়।

এক নজরে শ্রীলঙ্কা

  • সরকারী নামঃ গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রি শ্রীলংকা (Democratic Socialist Republic of Sri Lanka)
  • রাজধানিঃ কলম্বো (বাণিজ্যিক রাজধানী); শ্রী জয়েওয়ার্দেণপুরা কোট্টে (Sri Jayewardenepura Kotte) (আইনসভা রাজধানী)
  • জনসংখ্যাঃ ২,২৫,৭৬,৫৯২ (২০১৮ সাল অনুযায়ী)
  • সরকারী ভাষাঃ সিংহলা (Sinhala)
  • মুদ্রাঃ শ্রীলঙ্কান রুপি 
  • সরকারের ধরনঃ রাষ্ট্রপতি শাসিত প্রজাতন্ত্র
  • জলবায়ুঃ ক্রান্তীয় বর্ষা দেখতে পাওয়া যায়; উত্তর-পূর্ব বর্ষা (ডিসেম্বর থেকে মার্চ); দক্ষিণ-পশ্চিম বর্ষা (জুন থেকে অক্টোবর)
  • মোট অঞ্চল: ২৫,৩৩২ বর্গমাইল (৬৫,৬১০ বর্গ কিলোমিটার)
  • সর্বোচ্চ পয়েন্ট: ৮,২৮১ ফুট (২,৫২৪ মিটার) এ পিদুরুতালালা
  • সর্বনিম্ন পয়েন্ট: ভারত মহাসাগর ০ ফুট (০ মিটার)

শ্রীলঙ্কার ইতিহাস

sigiriya-rock
sigiriya-rock

এটা বিশ্বাস করা হয় যে শ্রীলঙ্কায় মানুষদের বসবাসের সূচনা হয়েছিলো, খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে। এ সময় বর্তমান শ্রীলংকানদের পূর্ব-পুরুষগণ (সিংহলিরা) ভারত থেকে এ দ্বীপে চলে এসেছিল এবং বসবাস শুরু করেছিলো। এর প্রায় ৩০০ বছর পরে, বৌদ্ধধর্ম শ্রীলঙ্কায় ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে দ্বীপের উত্তর অংশে সিংহলী জনবসতিগুলি খুব বেশি সংগঠিত হয়েছিল।

খ্রিস্টপূর্ব ২০০ থেকে ১২০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকে এবং ক্রমাগত এটি আরও প্রভাবশালী হতে থাকে। এর কিছুকাল পরে দক্ষিণ ভারত থেকে শ্রীলংকায় আক্রমণ শুরু হয়। বিশেষকরে, দক্ষিন ভারতীয় হিন্দুরা, নিজেদের প্রভাব সৃষ্টির লক্ষে এ ধরণের আক্রমণ করেছিলো, যার ফলে সিংহলিরা দ্বীপটির দক্ষিণে চলে যেতে বাধ্য হয়।

সিংহলিদের দ্বারা দ্বীপদেশটিতে প্রথম দিকে বসতি স্থাপন শুরু হয়েছিলো। তবে খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দী থেকে ১২০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তামিলদের দ্বারাও বসতি স্থাপন শুরু হয়। তামিলরা ছিল এই দ্বীপের দ্বিতীয় বৃহত্তম নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী।

দ্বীপের প্রাথমিক বসতি স্থাপনের সময়, সিংহলি এবং তামিল শাসকরা প্রায়শই দ্বীপের উপর স্ব-স্ব আধিপত্যে বজায় রাখার জন্য লড়াইয়ে লিপ্ত হতো । এর ফলে তামিলরা এই দ্বীপের উত্তরের অংশে এবং সিংহলিরা দক্ষিণের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল এবং সে সময় থেকেই এ অঞ্চল ঘিরেই তারা নিজেদের বসবাসের জন্য আবাস তৈরি করতে শুরু করে।

১৫০৫ সালের দিকে শ্রীলঙ্কায় প্রথম ইউরোপীয় জনগোষ্ঠীর যাতায়াত শুরু হয়। প্রথমে কিছু পর্তুগিজ ব্যবসায়ী বিভিন্ন মশলার সন্ধানে দ্বীপে অবতরণ করে, এবং দ্বীপের উপকূল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। সেই সাথে তারা দ্বীপটিতে ক্যাথলিক ধর্ম প্রচার শুরু করে। এর বেশকিছু কাল পরে ১৬৫৮ সালের দিকে ডাচরা শ্রীলঙ্কাকে পুনরায় দখল করে নেয়, কিন্তু ব্রিটিশরা

১৭৯৬ সালে এ দ্বীপ দেশটিতে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। শ্রীলঙ্কায় বসতি স্থাপনের পরে ব্রিটিশরা ১৮১৫ সালে ক্যান্ডির রাজাকে (king of Kandy) পরাজিত করে আনুষ্ঠানিক ভাবে সিলনে (Ceylon) ক্রাউন কলোনী তৈরি করে। ব্রিটিশ শাসনামলে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি মূলত চা নির্ভর ছিল। এছাড়া রাবার এবং নারকেলের উপর ভিত্তি করে তাদের অর্থনীতি ধীরে ধীরে সমৃদ্ধ হচ্ছিল।

১৯৩১ সালের দিকে ব্রিটিশরা সিলোনে(শ্রীলঙ্কা) তাদের শাসন অনেকটাই সীমিত করে ফেলেছিল। অবশেষে ১৯৪৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি দেশটি কমনওয়েলথ অফ নেশনস (Commonwealth of Nations) এর একটি স্ব-শাসিত দেশ হিসেবে যাত্রা শুরু করে।

১৯৪৮ সালে শ্রীলঙ্কার স্বাধীনতার পরে, সিংহলি ও তামিলদের মধ্যে অনেকদিন চাপা পড়া দ্বন্দ্ব পুনরায় শুরু হয়। এর প্রধান কারন ছিল, স্বাধীনতার পরে সংখ্যাগরিষ্ঠ সিংহলিরা দেশটির নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে এবং প্রায় ৮,০০,০০০ তামিল নাগরিকের নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেয়। মূলত এরপর থেকেই শ্রীলঙ্কায় নাগরিক অশান্তি অব্যাহত রয়েছে। ১৯৪৮ সালে, সিলোন একটি প্রজাতন্ত্র হয়ে ওঠে এবং ১৯৭২ সালে দেশটি সিলন নামটি পরিত্যাগ করে বর্তমান নামটি গ্রহণ করে।

১৯৮৩ সালের দিকে এখানে একটি গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছিল, যেখানে তামিলরা শ্রীলংকার উত্তর অঞ্চলকে নিজেদের স্বাধীন রাজ্য হিসেবে দাবি করেছিল। সে সময়ের পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত অস্থিতিশীলতা একটি স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দারিয়েছিল এবং ১৯৯০ এবং ২০০০ সালের দশকগুলোতে সহিংসতা আরও তীব্রতর হয়। বিশেষকরে তামিল নেতা ভিলুপিল্লাই প্রভাকরণ এর নেতৃত্বে তামিলরা সিঙ্ঘলিদের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়তে সক্ষম হয়েছিলো। ২০০৯ সালে প্রভাকরণের মৃত্যুর পর বহুদিন ধরে চলমান গৃহযুদ্ধ পুরোটাই একপেশে হয়ে পরে।

শ্রীলঙ্কার সরকার পরিবর্তন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলির চাপ এবং বিরোধী তামিল নেতার হত্যার ফলে শ্রীলঙ্কায় অস্থিরতা ও সহিংসতা প্রকৃত অর্থে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়ে যায়। বর্তমানে দেশটির জাতিগত সহিংসতা দূর করা এবং দেশকে একীকরণের কাজ চলমান রয়েছে।

শ্রীলংকার ভাষা এবং ধর্ম

শ্রীলংকার প্রধান নৃগোষ্ঠীর মধ্যে ভাষা এবং ধর্মের ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। সিংহলীদের মাতৃভাষা হ’ল সিংহালা, যা একটি ইন্দো-আর্য ভাষা এবং তামিলরা দ্রাবিড় ভাষায় কথা বলে। সিংহলীদের ৯০ শতাংশেরও বেশি বৌদ্ধ হলেও শ্রীলঙ্কা এবং ভারতীয় তামিলরা কট্টর হিন্দু হিসেবে পরচিত।

দেশটিতে বেশ কিছু মুসলমান ধর্মাবলম্বী দেখতে পাওয়া যায়, যারা সাধারণত তামিল ভাষায় কথা বলে। জনসংখ্যার প্রায় ৭ শতাংশ খ্রিস্টধর্মের অনুসারী, যারা সিংহলী, তামিল, এবং বুঘের সম্প্রদায়ের মধ্যে থেকে এসেছে।

শ্রীলঙ্কার জনসংখ্যা

স্বাধীনতার সময় শ্রীলঙ্কার জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৬৫ লক্ষের মতো। ১৯৯০ এর গোড়ার দিকে এ সংখ্যা বেড়ে ১.৭ কোটিও বেশি হয়েছে। ১৯৭০ এর দশকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির বার্ষিক গড় হার ছিল প্রায় ২.৬ শতাংশ। যদিও একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে এ হার ধারাবাহিকভাবে হ্রাস পেয়ে ১ শতাংশের নিচে চলে এসেছে। গৃহযুদ্ধের শেষে জনসংখ্যা ২.১ কোটিরও বেশি পৌঁছেছিল, এবং যুদ্ধের পরে এর বৃদ্ধির হার ১ শতাংশের নিচে নেমে যায়।

লংকান জনসংখ্যার বেশিরভাগই তরুণ এবং প্রায় এক-চতুর্থাংশ ১৫ বছরের কম বয়সী এবং জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের বয়স ৩০ বছরের কম।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা

 trains

trains

সরকার শ্রীলঙ্কার শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত, নির্দিষ্ট এবং পেশাদারী উপায়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রযুক্তি বিনামূল্যে শিক্ষা সরবরাহ করে থাকে। দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে শিক্ষার্থী ভর্তির হার ১০০ ভাগ এবং সে জন্য দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যাবস্থা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি উন্নত। মোট জনসংখ্যার ৮৫ শতাংশেরও বেশি সাক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন।

উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে শ্রীলংকা সর্বাধিক সাক্ষরতার হার সম্পন্ন দেশগুলির মধ্যে একটি। দেশে প্রচলিত উচ্চ শিক্ষার একটি শক্তিশালী একাডেমি রয়েছে, যা অনেকটা পক্ষপাতদুষ্ট। এর ফলে বিশেষত শিক্ষিত বেকার যুবকদের মধ্যে ব্যাপক হতাশার সৃষ্টি করেছে।

প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে রুহুনা বিশ্ববিদ্যালয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত; জাফনা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৪ এবং কেলানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং শ্রী জয়েওয়ার্নেণপুরা বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৫৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মর্যাদায় উন্নীত না হওয়া পর্যন্ত উভয়ই বৌদ্ধ শিক্ষার কেন্দ্র ছিল।

শ্রীলঙ্কায়, সরকারীভাবে স্বাস্থ্যসেবা বিনামূল্যে নির্ধারণ করা হয়েছে। এর হাসপাতাল ও ডিসপেনসারিগুলি বেশির ভাগ সরকারি নিয়ন্ত্রণ এবং বেসরকারি বিস্তৃত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত কয়েকটি বিশেষ প্রচারণা, এবং পরিবার পরিকল্পনার একটি প্রোগ্রাম সবই পশ্চিমা চিকিত্সা প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। শ্রীলঙ্কায় স্বাস্থ্যের অবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে।

এই পরিষেবাগুলি পশ্চিমা ওষুধের একটি ছোট বেসরকারী খাতের সাথে সহাবস্থান করে। নিরাময়মূলক স্বাস্থ্যসেবার বিভিন্ন দেশীয় ঐতিহ্য, যার মধ্যে কিছু সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা গ্রহণ করে, মূলত বেসরকারী খাতে থেকে যায় তবে শ্রীলঙ্কার চিকিত্সা চর্চায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ঐতিহ্যবাহী ওষুধের (আয়ুর্বেদ) অনুশীলনকারীরা পশ্চিমা প্রশিক্ষিত চিকিত্সকদের চেয়েও বেশি। প্রধান স্বাস্থ্য সমস্যাগুলির মধ্যে রয়েছে অপুষ্টি এবং বিভিন্ন গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সংক্রামক রোগ।

শ্রীলঙ্কার সরকার ব্যাবস্থা

বর্তমানে, শ্রীলঙ্কার সরকার ব্যাবস্থাকে একটি একক সাংবিধানিক আইনসভা এবং একই সাথে একটি প্রজাতন্ত্র হিসাবে বিবেচনা করা হয়। লংকান পার্লামেন্টের সদস্যগণ একটি সাধারণ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন। শ্রীলঙ্কার কার্যনির্বাহী সংস্থা তার প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতি সমন্বয়ে গঠিত এবং এরা উভয়ই মূলত একই ব্যক্তি, যিনি ছয় বছরের মেয়াদে একটি জনপ্রিয় ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন।

শ্রীলঙ্কার বিচার বিভাগীয় ব্যাবস্থার শ্রীলংকান সুপ্রিম কোর্ট এবং আপিল বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত। বাংলাদেশের মতোই প্রত্যেক বিচারপতি রাষ্ট্রপতির দ্বারা নির্বাচিত হন। শ্রীলঙ্কা সরকারিভাবে আটটি প্রদেশে বিভক্ত।

শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি

শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি আজ মূলত পরিষেবা খাত এবং শিল্প খাতের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। তবে কৃষি খাতও দেশটির অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শ্রীলঙ্কার প্রধান শিল্পগুলির মধ্যে রয়েছে রাবার প্রসেসিং, টেলিযোগাযোগ, টেক্সটাইল, সিমেন্ট, পেট্রোলিয়াম পরিশোধন এবং কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াকরণ।

শ্রীলঙ্কার প্রধান কৃষি রফতানির মধ্যে রয়েছে চাল, আখ, চা, মশলা, শস্য, নারকেল, গরুর মাংস এবং মাছ। শ্রীলঙ্কায় পর্যটন শিল্প এবং এ সম্পর্কিত পরিষেবা শিল্পগুলোও ক্রমাগত সমৃদ্ধ হচ্ছে।

শ্রীলঙ্কার ভূগোল ও জলবায়ু

সব মিলিয়ে শ্রীলংকার বিভিন্ন অঞ্চল মূলত সমতলভূমি নিয়ে গঠিত। দেশের অভ্যন্তরের দক্ষিণ-মধ্য অংশে পর্বত বেষ্টিত অঞ্চল দেখা যায় এবং খাড়া গিরিখাত এর পার্শ্ববর্তী নদী রয়েছে। সমতল অঞ্চলগুলিতে শ্রীলঙ্কার বেশিরভাগ কৃষিক্ষেত্র বিদ্যমান এবং উপকূলীয় অঞ্চলে অনেক বড় বড় নারকেল খামার চোখে পরে।

শ্রীলঙ্কার জলবায়ু প্রধানত গ্রীষ্মমন্ডলীয় এবং দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল সবচেয়ে আর্দ্র আবহাওয়া বিরাজমান। দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমে এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত বেশিরভাগ বৃষ্টিপাত হয় এবং অক্টোবর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে এ আবহাওয়া দেখতে পাওয়া যায়। শ্রীলঙ্কার উত্তর-পূর্বাঞ্চল শুষ্ক এবং এর বেশিরভাগ বৃষ্টিপাত ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হয়। শ্রীলঙ্কার গড় বার্ষিক তাপমাত্রা প্রায় ৮৬ ডিগ্রি থেকে ৯১ ডিগ্রি ফারেনহাইট (২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস) হয়।

শ্রীলঙ্কা সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভৌগলিক নোট হ’ল ভারত মহাসাগরে এর অবস্থান, যা এটি বিশ্বের বৃহত্তম প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের একটিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছিল। ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০০৪ এ এশিয়ার ১২ টি দেশকে আঘাত করে একটি বিশাল সুনামি। এই ইভেন্টে শ্রীলঙ্কার প্রায় ৩৮,০০০ মানুষ মারা গিয়েছিল এবং শ্রীলঙ্কার উপকূলের বেশিরভাগ অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে।

 

https://www.britannica.com/place/Sri-Lanka/History

https://www.thoughtco.com/geography-of-sri-lanka-1435578

 

1 thought on “শ্রীলঙ্কাঃ তথ্য এবং ইতিহাস”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top