সিঙ্গাপুর, এ শহর রাষ্ট্রটির কথা চিন্তা করলে এর বড় বড় উঁচু বিল্ডিং, সমৃদ্ধশালী সমুদ্র বন্দর সহ অনেক দৃষ্টি নন্দন স্থাপনা, এবং পরিছন্নতার বিষয়টি চোখে ভাসে। অবাক করা বিষয় হল, ১৯৬০ এর দশকের আগেও সিঙ্গাপুরের চেহারা কিন্তু এরকম ছিল না।
অনেক কিছুই হয়তো এরকম ছিলনা, কিন্তু যে বিষয়টা এখানে বলার চেস্টা করছি তা হল এতো দ্রুত উন্নতি কোন একটি দেশের পক্ষে হয়তো সম্ভব নয়। তাহলে সিঙ্গাপুর এ অবস্থায় কিভাবে আসলো? প্রশ্নটি এখানেই, এবং সে উত্তরটাই আজ জানার চেস্টা করবো।
১৯৬০ এর দশকে সিঙ্গাপুর ছিল একটি অনুন্নত দেশ, মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৩২০ ডলারেরও নিচে। কিন্তু আজ দেশটির দিকে তাকালে কি দেখতে পান? সিঙ্গাপুর বিশ্বের দ্রুত বর্ধমান অর্থনীতির একটি দেশ। মাথাপিছু জিডিপি বেড়েছে অবিশ্বাস্য হারে।
আপনি ভাবলে অবাক হবেন যে এর মাথাপিছু জিডিপি বর্তমানে ৬০,০০০ মার্কিন ডলারে উন্নিত হয়ে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতি হিসাবে পরিণত হয়েছে।
সামান্য কিছু প্রাকৃতিক সম্পদ সমৃদ্ধ একটি ছোট্ট দেশের পক্ষে এটা কিভাবে সম্ভব হল। বিশ্বায়ন, মুক্তবাজারী পুঁজিবাদ, শিক্ষা এবং বাস্তববাদী নীতিগুলি গ্রহণ করে দেশটি কিভাবে তার ভৌগলিক অসুবিধাগুলি কাটিয়ে উঠতে পেরেছে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যে শীর্ষস্থানীয় হতে সক্ষম হয়েছে সে বিশয়গুলোও আজ আমাদের আলোচ্য বিষয়।
সিঙ্গাপুরের স্বাধীনতা অর্জন
দক্ষিন পূর্ব এশিয়ার কিছু দেশের ন্যায়, সিঙ্গাপুরও ব্রিটিশদের দ্বারা শাসিত হয়েছে। ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সিঙ্গাপুর ব্রিটিশদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশরা জাপানিদের কাছ থেকে উপনিবেশকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হলে, এ অঞ্চলে একটি শক্তিশালী ঔপনিবেশিক ও জাতীয়তাবাদী মনোভাব সৃষ্টি হয় যা পরবর্তীকালে সিঙ্গাপুরকে স্বাধীনতার দিকে পরিচালিত করে।
১৯৬৩ সালের ৩১ আগস্ট, সিঙ্গাপুর ব্রিটিশ শাসন থেকে থেকে মুক্ত হয়ে মালয়েশিয়ার সাথে একীভূত হয়ে মালয়েশিয়া ফেডারেশন গঠন করে। কিন্তু সিঙ্গাপুরের জন্য এ সময়টি খুব একটা সুখকর ছিলনা।
মালয়েশিয়ার অংশ হিসাবে সিঙ্গাপুর যে দুই বছর অতিবাহিত করেছিল তা সামাজিক কলহ দ্বারা পরিপূর্ণ ছিল, কারণ উভয় পক্ষ একে অপরের সাথে নৃতাত্ত্বিকভাবে পার্থক্যর কারনে লড়াইয়ে লিপ্ত ছিল। রাস্তার দাঙ্গা এবং সহিংসতা খুব সাধারণ ঘটনা হয়ে ওঠে।
সিঙ্গাপুরে বসবাসরত চীনারা এক্ষেত্রে বড় ভুমিকা পালন করে। মালয় রাজনীতিবিদরা এ বিষয়টিকে খুব গুরুত্বের সাথে দেখতে শুরু করে এবং এ ধরনের চীনা প্রভাবকে তারা তাদের রাজনৈতিক আদর্শের হুমকি হিসেবে মনে করতে থাকে।
মালয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করা এবং কমিউনিজমের প্রভাব সীমাবদ্ধ করার উপায় হিসাবে মালয়েশিয়ার সংসদ সিঙ্গাপুরকে মালয়েশিয়া থেকে বহিষ্কার করার পক্ষে ভোট দেয়। ১৯৬৫ সালের ৯ আগস্ট সিঙ্গাপুর আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা লাভ করে। ইউসুফ বিন ইশাক হন দেশটির প্রথম রাষ্ট্রপতি এবং অত্যন্ত প্রভাবশালী লি কুয়ান ইয়ু প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
স্বাধীনতার পরে, সিঙ্গাপুরের এ সমস্যাগুলি অব্যাহত থাকে। নব গঠিত এ রাস্ট্রে বসবাসরত ত্রিশ মিলিয়ন লোকের বেশিরভাগই ছিল বেকার । এ সময় সিঙ্গাপুরের মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি মানুষ নগরীর প্রান্তের বস্তি এবং বিচ্ছিন্ন জনবসতিগুলিতে বাস করছিল। অঞ্চলটি মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো দুটি বৃহত এবং বন্ধুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রের মধ্যে একপ্রকার স্যান্ডউইচ এর মতো ছিল।
সিঙ্গাপুরে সে সময় প্রাকৃতিক সম্পদ, স্যানিটেশন, সঠিক অবকাঠামো এবং পর্যাপ্ত জল সরবরাহের অভাব ছিল। উন্নয়নের উদ্দীপনা জোগানোর জন্য, প্রধানমন্ত্রী লি আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁর আবেদনের কোনও উত্তর দেওয়া হয়নি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে। ফলে, এ সময় সিঙ্গাপুরকে নিজের মত করেই ভাবতে শুরু করতে হয়। হয়তো এটাই তাদের জন্য আশীর্বাদ হিসেবে পরবর্তীতে কাজ করেছে।
সিঙ্গাপুর যেভাবে বিশ্বায়নের যুগে প্রবেশ করে
পূর্বেই আলোচনা করা হয়েছে, স্বাধীনতার আগে সিঙ্গাপুর অর্থনৈতিক দিক দিয়ে ভঙ্গুর একটি দেশ ছিল। উপনিবেশিক শাসন আমলে এর অর্থনীতির মুল কাঠামো ছিল মুলত আন্তঃব্যক্তি কেন্দ্রিক।
ব্রিটিশ শাসন থেকে পরিত্রাণ পাবার পরে অথবা মালিয়েশিয়ার সাথে একীভূত থাকা কালীন সময়ে দেশটির সার্বিক অস্থিতিশীল পরিবেশ অর্থনৈতিক ধ্বস অরো বাড়িয়ে তোলে। বিশেষ করে ব্রিটিশরা চলে যাবার পরে চাকুরির (ধরতে পারেন সার্বিক কর্মসংস্থান) ক্ষেত্র কমে যাওয়ায় বেকার পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছিল।
শ্রম-নিবিড় শিল্পগুলিতে ফোকাস দিয়ে সিঙ্গাপুরের অর্থনৈতিক ও বেকারত্ব সমস্যার সবচেয়ে সম্ভাব্য সমাধান ছিল শিল্পায়নের একটি বিস্তৃত কর্মসূচি গ্রহণ করা।
কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে, শিল্পায়নের ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুরের কোনও অতীত শিল্প ঐতিহ্য ছিল না। এর কর্মক্ষম জনসংখ্যার বেশিরভাগই ক্ষুদ্র বাবসা-বাণিজ্য এবং সেবাখাত গুলোতে কর্মরত ছিল। সিঙ্গাপুর এটা খুব সহজেই বুঝতে পেরেছিল এভাবে কখনই কোন উন্নয়ন আসতে পারেনা।
এক্ষেত্রে, তাদের শিল্পক্ষেত্রে কোনও দক্ষতা না থাকা সত্ত্বেও, একটি আন্তঃদেশীয় এবং কাছের প্রতিবেশী দেশ যারা এর সাথে বাণিজ্য করবে তাদের ছাড়াই সিঙ্গাপুর তার শিল্প বিকাশের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সুযোগের সন্ধান খুঁজতে বাধ্য হয়েছিল।
দেশটি তাদের নাগরিকদের কাজের সন্ধান করে আত্মঃনির্ভরশীল হওয়ার জন্য চাপ দেয়, সেই সাথে সিঙ্গাপুরের নেতারা বিশ্বায়ন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা শুরু করে। প্রধানমন্ত্রী লি বুঝতে পেরেছিলেন শিল্পক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলো তাদের সহযোগিতা করতে পারে।
ইউরোপ ও আমেরিকার বাণিজ্যনীতির দ্বারা প্রভাবিত, লি এবং তার সহকর্মীরা জানত যে তাদের উন্নত বিশ্বের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে হবে এবং বহুজাতিক কর্পোরেশনগুলিকে সিঙ্গাপুরে উৎপাদন করাতে রাজি করতে হবে।
বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করার জন্য সিঙ্গাপুরকে এমন পরিবেশ তৈরি করতে হয়েছিল যা নিরাপদ, দুর্নীতিমুক্ত এবং করের হার কম। এটি সম্ভব করার জন্য, দেশের নাগরিকদের প্রতি সিঙ্গাপুর সরকার বেশকিছু কঠোর নিয়ম চালু করে। মাদক ব্যবসায়ি এবং যারা বড় বড় দুর্নীতির সাথে জড়িত রয়েছে তাদের মৃত্যুদণ্ডের ব্যবস্থা করা হয়।
লি’র পিপল অ্যাকশন পার্টি (পিএপি) সমস্ত স্বতন্ত্র শ্রমিক ইউনিয়নকে দমন করে এবং দলটি সরাসরি ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস (এনটিইউসি) নামে একটি একক স্বতন্ত্র গ্রুপের মাধ্যমে বিভিন্ন দলের উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে। জাতীয় স্বার্থের প্রতি হুমকি, এমন ব্যক্তিদের খুব বেশি সময় না দিয়ে, কোন রকম স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ছাড়াই দ্রুত কারাগারে বন্দী করা হয়।
এগুলো ছাড়াও, সিঙ্গাপুর বেশকিছু দৃশ্যমান গৃহীত পদক্ষেপ সারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে সক্ষম হয়। দেশটির কঠোর, কিন্তু ব্যবসায়-বান্ধব আইন আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের কাছে অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য এবং আগ্রহী করে তোলে।
দেশটি তার প্রতিবেশীদের কিছু বাধা সত্ত্বেও রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশকে স্থিতিশীল রাখতে পেরেছিল। তদুপরি, এর সুবিধাজনক অবস্থান এবং প্রতিষ্ঠিত বন্দর ব্যবস্থা সহ সিঙ্গাপুর পণ্য তৈরির জন্য আদর্শ জায়গা ছিল।
স্বাধীনতার ঠিক সাত বছর পরে ১৯৭২ সাল নাগাদ সিঙ্গাপুরের এক-চতুর্থাংশ উৎপাদনকারী সংস্থা বা কোম্পানিগুলো উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করে। যাদের বেশিরভাগই ছিল বিদেশী মালিকানাধীন যৌথ-উদ্যোগী সংস্থা। এদের মধ্যে ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপান উভয়ই দেশের প্রধান বিনিয়োগকারীগন।
সিঙ্গাপুরের অনুকূল জলবায়ু, সুবিধাজনক বিনিয়োগের পরিবেশ ১৯৬৫ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত বিশ্ব অর্থনীতির দ্রুত প্রসারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে এবং দেশটির গ্রস ডমেস্টিক প্রোডাক্ট (জিডিপি) বৃদ্ধির দিক দিয়ে বার্ষিক দ্বি-অঙ্কের কোঠায় উন্নিত হয়।
বিদেশী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়ার সাথে সাথে সিঙ্গাপুর তার অবকাঠামো উন্নয়ন এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে মনোনিবেশ করা শুরু করে। দেশটি অনেক প্রযুক্তিগত স্কুল স্থাপন করে এবং তাদের দক্ষ কর্মীদের তথ্য প্রযুক্তি, পেট্রোকেমিক্যালস এবং ইলেকট্রনিক্স সম্পর্কে প্রশিক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক কর্পোরেশনগুলিকে নিয়োগ দেয়।
যাদের শিল্প ক্ষেত্রে চাকরি পাবার যোগ্য বলে মনে করা হতো না, তাদের জন্য সরকার শ্রম-নিবিড় অ-বাণিজ্যযোগ্য পরিষেবা, যেমন পর্যটন এবং পরিবহণের জন্য তালিকাভুক্ত করে। বহুজাতিক সংস্থাগুলি সিঙ্গাপুরের কর্মশক্তিকে যেভাবে দক্ষ জনশক্তিতে রুপান্তর করে, সেটা দেশটির পরবর্তী উন্নয়ন ধাপের জন্য বেশ বড় লভ্যাংশ দিয়েছিল।
১৯৭০ এর দশকে, সিঙ্গাপুর মূলত বস্ত্র, পোশাক এবং ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী রফতানি করত। ১৯৯০ এর দশকের মধ্যে, তারা ওয়েফার ফেব্রিক্স, বায়োটেক গবেষণা, ফার্মাসিউটিক্যালস, ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট ডিজাইন এবং মহাকাশ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে্র সাথে নিজেদের যুক্ত করে নেয়।
আধুনিক অর্থনীতিতে সিঙ্গাপুরের ভুমিকা
বর্তমানে, সিঙ্গাপুর একটি আধুনিক, শিল্পোন্নত সমাজ এবং এন্টারপ্রাইজ বাণিজ্য ভিত্তিক অর্থনীতিতে বিশ্বে প্রধান ভূমিকা পালন করে চলেছে। সিঙ্গাপুর বন্দর এখন হংকং এবং রটারড্যামকে ছাড়িয়ে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দর হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। পণ্য ট্রানজিটের ক্ষেত্রে, এটি সাংহাই বন্দরের পরে, বিশ্বের দ্বিতীয় ব্যস্ততম স্থান/বন্দর হয়ে উঠেছে।
ছোট্ট একটি দেশ হওয়া সত্ত্বেও সিঙ্গাপুর তার পর্যটন শিল্পকেও সমৃদ্ধ করেছে। প্রতি বছর ১ কোটিরও বেশি পর্যটক সিঙ্গাপুর ভ্রমণ করে। শহর রাষ্ট্রটি এখন একটি চিড়িয়াখানা, একটি রাতের সাফারি এবং একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার হিসেবে বিশ্বে পরিচিত।
দেশটি সম্প্রতি মেরিনা বে স্যান্ডস এবং রিসর্টস ওয়ার্ল্ড সেন্টোসোয়ায় নামে বিশ্বের ব্যয়বহুল দুটি সমন্বিত ক্যাসিনো রিসর্ট খুলেছে।
সিঙ্গাপুরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং উন্নত চিকিৎসা প্রযুক্তির দেশটির মেডিকেল ট্যুরিজম ক্ষেত্রে ব্যাপক অবদান রেখে চলেছে। এছাড়া এর রান্না সম্পর্কিত বিশয়গুলি পর্যটন শিল্প বিকাশে বড় ভুমিকা পালন করেছে।
ব্যাংকিং ক্ষেত্রেও সাম্প্রতিক বছরগুলিতে সিঙ্গাপুর তার দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে সমানতালে। এবং এটি উত্তরোত্তর উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে সুইজারল্যান্ডের ব্যাঙ্কগুলি নতুন কর নীতি গ্রহন করার কারণে পূর্বে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে রক্ষিত প্রচুর সম্পদ সিঙ্গাপুরের হাতে চলে গেছে।
বায়োটেক শিল্প বাড়ছে, গ্ল্যাক্সো স্মিথক্লাইন, ফিজার এবং মার্ক অ্যান্ড কোয়ের মতো ওষুধ প্রস্তুতকারীরা সকলেই এখানে তাদের শাখা স্থাপন করছে এবং তেল পরিশোধন অর্থনীতির ক্ষেত্রেও সিঙ্গাপুর এখন বিশাল ভূমিকা পালন করছে বিশ্ব অর্থনীতিতে।
আকারে ছোট হলেও, সিঙ্গাপুর এখন যুক্তরাষ্ট্রের ১৫ তম বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। দেশটি দক্ষিণ আমেরিকা, ইউরোপ এবং এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশের সাথে শক্তিশালী বাণিজ্য চুক্তি করেছে এবং এর প্রসারতা অব্যাহত রেখেছে।
দেশে বর্তমানে প্রায় তিন হাজারেরও বেশি বহুজাতিক সংস্থা রয়েছে, যারা উৎপাদন এবং প্রত্যক্ষ রপ্তানির ক্ষেত্রে দেশটির দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি হিসাবে কাজ করছে।
মাত্র ৪৩৩ বর্গমাইলের একটি দেশ এবং যার জনসংখ্যা মাত্র ৩০ লক্ষ। এমন একটি ক্ষুদ্র শ্রমশক্তি নিয়ে সিঙ্গাপুর জিডিপি ক্ষেত্রে প্রতিবছর ৩০০ বিলিয়ন ডলার উৎপাদন করতে সক্ষম হচ্ছে। ৮৩.৭৫ গড় আয়ু নিয়ে সিঙ্গাপুর বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ গড় আয়ুর দেশ।
আপনি যদি অনুপ্রাণিত হতে চান, সে যে কোন মাধ্যম দিয়েই হোক না কেন, তবে আপনি সিঙ্গাপুরকে অনুসরন করতে পারেন। আমরা হয়তো এটা ভাবতে পারি যে, একটি দেশের থেকে ব্যাক্তি জীবনে শিক্ষা কিভাবে অর্জন করা সম্ভব। কিন্তু আমি বলব এ ধরনের চিন্তা করাটা সঠিক কাজ নয় আমাদের জন্য। কারন সঠিক শিক্ষা যে কোন কিছু থেকেই গ্রহন করা যায়, যদি আপনি আন্তরিকভাবে সেটা চাইতে পারেন।
আপনি যদি জীবন চলার পথে কঠোর নিয়মগুলি না মানেন তবে সিঙ্গাপুরকে বেঁচে থাকার অন্যতম সেরা জায়গা হিসেবে বিবেচনা করতে পারবেন না।
তথ্যসূত্রঃ- https://en.wikipedia.org/wiki/Singapore
https://www.thoughtco.com/singapores-economic-development-1434565
https://en.wikipedia.org/wiki/Economy_of_Singapore