১৯৬৮ সালের ৪ এপ্রিল সন্ধ্যা ০৬.০১ মিনিটে নাগরিক অধিকার আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা ডঃ মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র স্নাইপারের বুলেটে মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন। লুথার কিং, টেনেসির মেমফিসের লোরেন মোটেলে নিজের ঘরের সামনে বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলেন, এ সময় একপ্রকার বিনা সতর্কতায় তাকে গুলি করা হয়েছিল। .৩০ ক্যালিবার রাইফেল বুলেটটি কিংয়ের ডান গালে প্রবেশ করে, ঘাড়ের মধ্যদিয়ে অবশেষে তার কাঁধের শিরদাঁড়ায় গিয়ে আটকে যায়। কিংকে তৎক্ষণাৎ নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু পরের দিন সকাল ০৭.০৫ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
মারটিন লুথারের মৃত্যুর পরে চারিদিকে সহিংসতা ও বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে। হত্যাকান্ডের জন্য ক্ষোভে ফেটে পরে, বহু কৃষ্ণাঙ্গ যুক্তরাষ্ট্রের রাস্তায় নেমে এসেছিল, চারদিকে বিশাল দাঙ্গা শুরু হয়ে যায়। এফবিআই এর উপর অপরাধ তদন্তের ভার পড়ে, এ সময় অনেককে হত্যার জন্য আংশিক বা পুরোপুরি দায়ী করা হয়। জেমস আর্ল-রে নামে একজনকে দোষী সাব্যস্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তবে মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের নিজের পরিবার সহ অনেকেই বিশ্বাস করেন, গ্রেফতারকৃত ব্যাক্তি নির্দোষ ছিলেন।
সেদিন সন্ধ্যায় আসলে কি হয়েছিলো? শান্তির দুত হিসেবে পরিচিত মারটিন লুথার কিং কে এভাবে কেন হত্যা করা হল, আর কিভাবে খুনির পক্ষে এ কাজটি করা সম্ভব হয়েছিলো, পুরো বিষয়টিই আজ জানতে চেস্টা করবো।
ডঃ মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র

১৯৫৫ সালে যখন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র মন্টগোমেরি বাস বয়কটের নেতা হিসাবে আবির্ভূত হন, তখন তিনি নাগরিক অধিকার আন্দোলনে অহিংস প্রতিবাদের মুখপাত্র হিসাবে দীর্ঘকাল দায়ীত্বরত ছিলেন। ব্যাপটিস্ট সম্প্রদায়ের মন্ত্রী হিসাবে তিনি নৈতিকভাবে দৃঢ়চেতা নেতা হিসেবে নিজেকে প্রমান করেছিলেন। এছাড়া, তিনি ছিলেন একজন ক্যারিশম্যাটিক ব্যাক্তি এবং যিনি প্রচন্ড বাস্তববাদী কথা বলার ক্ষমতা রাখতেন। প্রখর দৃষ্টিশক্তি ও সংকল্পের মানুষও ছিলেন ডঃ কিং। ভবিষ্যতে কী হতে পারে, তার স্বপ্ন দেখতে তিনি কখনও থামেননি।
তিনি অত্যধিক পরিশ্রমী একজন মানুষ ছিলেন এবং মহিলাদের ব্যক্তিগত সংস্থার প্রতি তাঁর আগ্রহ ছিল।
১৯৬৪ সালে তিনি নোবেল শান্তি পুরষ্কার বিজয়ী হলেও নাগরিক অধিকার আন্দোলনের উপর তাঁর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ ছিল না। ১৯৬৮ সালের মধ্যে, তাঁর আন্দোলনে সহিংসতা ঢুকে পরেছিল। ব্ল্যাক প্যান্থার পার্টির সদস্যরা নিজেদের কাছে বোঝা বোঝা অস্ত্র বহন করা শুরু করেছিল, সারা দেশে দাঙ্গা শুরু হয়েছিল এবং অসংখ্য নাগরিক অধিকার সংগঠন “ব্ল্যাক পাওয়ার!” মন্ত্রটি নিজেদের মধ্যে ধারণ করা শুরু করেছিলো।
তবুও মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র তার বিশ্বাসকে দৃঢ়তাঁর সাথে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন, এমনকি নাগরিক অধিকার আন্দোলনকে দু’ভাগে ছিন্নভিন্ন হতেও দেখেছিলেন তিনি। এহেন হিংস্রতা ১৯৬৮ সালের এপ্রিলে কিংকে মেমফিসে ফিরিয়ে নিয়ে আসে।
মেমফিসে স্যানিটেশন শ্রমিকদের ধর্মঘট

১৯৬৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি, মেমফিসে মোট ১৩০০ আফ্র-আমেরিকান স্যানিটেশন কর্মী, ধর্মঘট শুরু করে। যদিও এ সকল কৃষ্ণাঙ্গ শ্রমীকদের অভিযোগগুলির একটি দীর্ঘ ইতিহাস ছিল, তবে এই ধর্মঘট ৩১ শে জানুয়ারির একটি ঘটনার প্রতিক্রিয়া হিসাবে শুরু হয়, যেখানে ২২ জন কৃষ্ণাঙ্গ স্যানিটেশন কর্মীকে খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে বিনা বেতনে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল এবং সমস্ত শ্বেতাঙ্গ কর্মীরা ঠিকই চাকরিতে বহাল থেকে।
মেমফিস সিটি আধিকারিকগণ যখন ১,৩০০ ধর্মঘটকারী কর্মীর সাথে আলোচনা করতে অস্বীকার করেন, তখন কিং এবং অন্যান্য নাগরিক অধিকার আন্দোলনের নেতাদের সাথে মেমফিসের আন্দোলনকারীদের সমর্থন করেন।
১৮ মার্চ, সোমবার, মার্টিন লুথার কিং মেমফিসে দ্রুতই একটি কার্যকরী ব্যাবস্থা গ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন, যেখানে তিনি ম্যাসন টেম্পলিতে জড়ো হওয়া ১৫,০০০ এর বেশি ব্যক্তির সাথে কথা বলেন। এর দশ দিন পরে, কিং হরতাল কর্মীদের সমর্থনে একটি মার্চে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য মেমফিসে পৌঁছেছিলেন। দুর্ভাগ্যক্রমে, কিং মিছিলকারীদের নেতৃত্ব দেয়ার সময় কিছু সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে এবং শীঘ্রই বেশকিছু মানুষ লাঠি হাতে আশেপাশের ভবনের জানালা, দরজা ভাংচুর করে এবং লুটপাট চালায়।
পুলিশ ভিড় ছত্রভঙ্গ করতে এগিয়ে যায়। কয়েকজন মিছিলকারী পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়ে মারেন। টিয়ার গ্যাস ও নাইটস্টিক দিয়ে পুলিশ প্রতিক্রিয়া জানায়। একজন বিক্ষভকারিকে সে সময় গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। কিং এর নিজের পদযাত্রায় যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছিল তাতে তিনি অত্যন্ত উৎকণ্ঠিত হয়ে উঠেছিলেন এবং সহিংসতাকে আর বাড়তে না দেওয়ার জন্য দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করেন। এর ফলশ্রুতিতে ৪ এপ্রিল মেমফিসে আরেকটি রোডমার্চ নির্ধারণ করেছিলেন তিনি।
৩’রা এপ্রিল, মার্টিন লুথার কিং নির্ধারিত সময়ের চেয়ে একটু পরে মেমফিসে পৌঁছেছিলেন, কারণ তাঁর বিমানটি টেকঅফ করার আগে বিমানে বোমা রয়েছে বলে হুমকি ছিল। সেই সন্ধ্যায়, কিং তার “আমি মাউন্টেনটোনতে গিয়েছি” (“I’ve Been to the Mountaintop”) বক্তৃতায় তুলনামূলকভাবে একটি ছোট জমায়েতের উদ্দেশ্যে কিছু বার্তা দিয়েছিলেন, এখানে কিংয়ের চিন্তাভাবনায়, স্পষ্টতই তার মৃত্যুর বিষয়ে তিনি বেশ চিন্তিত ছিলেন, কারণ তিনি বিমানের হুমকির পাশাপাশি ছুরিকাঘাতের বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন। তিনি সেখানে যে বক্তব্য দেন তা ছিল এরকম-,
” ঠিক আছে, আমি জানি না এখন কী হবে; আমাদের সামনে বেশ কঠিন সময় আসছে। তবে এখন আমার আসলে কিছু আসে যায় না, কারণ আমি পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছে গিয়েছি এবং এতে আমার কোন আপত্তি নেই। যে কারো মতই,আমি একটি দীর্ঘ জীবন বাঁচতে চাই – দীর্ঘায়ুর জন্য সে সময়ও রয়েছে, তবে আমি এসব বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন নই। ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করতে চাই এবং তিনিই আমাকে পর্বতের শীর্ষে উঠার সুযোগ করে দিয়েছেন। আমি এখন চারিদিকেই দেখতে পাই, আমি এখান থেকে প্রতিশ্রুত নিচের ভূমিটি দেখতে পাই। আমি হয়তো তমাদের সাথে সেখানে যেতে পারবো না, তবে আমি আজ রাতে জানতে চাই কে কে আপনারা আমার সাথে সেখানে যেতে চান। আমরা জনগণ হিসাবে প্রতিশ্রুত ভূমিতে পৌঁছে যাব, এই আশাতেই আমি আজ খুশি। আমি কোনও বিষয়েই উদ্বিগ্ন নই; আমি কাউকেই ভয় করি না। আমার এই চোখ প্রভুর আগমনের গৌরব প্রত্যক্ষ করেছিলো। “
বক্তৃতার পরে, কিং বিশ্রাম নিতে লরেন মোটেলে ফিরে যান।
মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র যখন ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে

লোরেন মোটেল, বর্তমানে যেটি জাতীয় নাগরিক অধিকার আন্দোলনের যাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। মেমফিসের মুলবেরি স্ট্রিটে একটি অপেক্ষাকৃত ছোট, দ্বিতল মোটেল ছিল এটি। লুথার কিং লরেন মোটেলে অবস্থান কালিন সময়ে, তার সমর্থনকারীদের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে দেখাটা অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
১৯৬৮ সালের ৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় মার্টিন লুথার কিং এবং তার বন্ধুরা মেমফিসের মন্ত্রী বিলি কিলেসের সাথে রাতের খাবার খাওয়ার জন্য পোশাক পড়ছিলেন। সে সময় তিনি দ্বিতীয় তলায় ৩০৬ কক্ষে ছিলেন এবং যথারীতি তাদের খানিকটা দেরি হয়ে যাওয়ায় তারা তাড়াতাড়ি পোশাক পড়তে ব্যাস্ত ছিলেন। শার্টটি গায়ে দেওয়ার সময় এবং শেভ করতে ম্যাজিক শেভ পাউডার ব্যবহার করার সময়, কিং একটি আসন্ন ইভেন্ট সম্পর্কে রাল্ফ আবারনাথির সাথে কথা বলছিলেন।
বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে কিলস তাদের দ্রুত তৈরি হওয়ার জন্য তাদের দরজায় কড়া নাড়লেন। তিনজন লোকের রাতের খাবারের জন্য কী পরিবেশন করা উচিত তা নিয়ে রসিকতা চলছিলো। কিং এবং আবারনাথী এটা নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন যে, তাদেরকে যেন “পছন্দের খাবার” সরবরাহ করা হয়, ফিলেট মিগননের (filet mignon) মতো কিছু যেন না দেয়া হয় (ফিলেট মিগণন হচ্ছে মাংসের তৈরি একপ্রকার স্টেক জাতীয় খাবার)। এর প্রায় আধা ঘন্টা পরে, কাইলস এবং কিং মোটেল থেকে বারান্দায় পা রাখেন (মূলত বাইরের ওয়াকওয়ে যা মোটেলের দ্বিতীয়তলার ঘরগুলি সাথে সংযুক্ত করেছিল)। এ সময় আবারনাথী তার ঘরে গিয়েছিল গায়ে একটু সুগন্ধি লাগাতে।
বারান্দার ঠিক নীচে পার্কিংয়ের গাড়ীর কাছে অপেক্ষা করছিলেন কিংয়ের সহকর্মী জেমস বেভেল, চৌসেই এসক্রিজ (এসসিএলসি আইনজীবী), জেসি জ্যাকসন, হোসিয়া উইলিয়ামস, অ্যান্ড্রু ইয়ং, এবং সলোমন জোন্স, জুনিয়র (সাদা ক্যাডিল্যাকের ড্রাইভার)। নীচে অপেক্ষা করা পুরুষ, বিলি কাইলস এবং কিংয়ের মধ্যে কয়েকটি মন্তব্য বিনিময় করা হয়েছিল। জোনস মন্তব্য করেছিলেন যে কিংকে টপকোট পড়া উচিত কারণ এটি পড়লে তাঁর ঠান্ডা কম লাগতে পারে।”
মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের আঘাতপ্রাপ্ত হওয়া

কিলেস যখন সিঁড়ি থেকে কয়েক ধাপ উপরে ছিল তখন কিং কে গুলি করা হয়। এ সময় অ্যাবারনাথি মোটেলর ভিতরেই ছিল। কিছু লোক প্রাথমিকভাবে ভেবেছিল যে, এটি হয়তো কোন গাড়ীর শব্দ, তবে অন্যরা বুঝতে পেরেছিল যে এটি রাইফেলের গুলির শব্দই হবে। মার্টিন লুথার কিং, দেহে একটি বিশাল ক্ষত নিয়ে বারান্দার কংক্রিটের মেঝেতে পড়ে যান।
অবারনাথী তার ঘর থেকে বের হয়ে এসে দেখতে পান, তার প্রিয় বন্ধুটি রক্তের পুকুরের মধ্যে শুয়ে আছে। তিনি কিংয়ের মাথা কোলে তুলে নিয়ে বলেছিলেন, “মার্টিন, সব ঠিক আছে, সব ঠিক আছে। চিন্তা কোর না।
কিলেস একটি মোটর কক্ষে অ্যাম্বুলেন্সে কল করতে গিয়েছিল। একজন ছদ্মবেশী মেমফিসের পুলিশ অফিসার, মেরেল ম্যাকক্লাও একটি গামছা দিয়ে রক্ত বন্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন। কিং যদিও ভাবলেশহীন ছিল, তবুও তিনি বেঁচে ছিলেন। আক্রান্ত হওয়ার ১৫ মিনিটের মধ্যেই মার্টিন লুথার কিংকে হাসপাতালে পৌঁছে দেয়া হয়।
তার ডান চোয়ালে একটি .৩০-০৬ ক্যালিবার রাইফেলের বুলেট আঘাত করেছিলো, তারপরে তার ঘাড়ের মধ্যদিয়ে, মেরুদণ্ড ছিন্ন করে কাঁধের ব্লেডে এসে গুলিটি আটকে যায়। চিকিত্সকরা জরুরি অস্ত্রোপচারের চেষ্টা করেছিলেন তবে আঘাতটি খুব গুরুতর ছিল। মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রকে পরদিন সকাল ০৭.০৫ মিনিটে মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল। এসময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ৩৯ বছর।
মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রকে কে হত্যা করেছিল?

মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রকে হত্যার জন্য কে দায়ী, এমন প্রশ্নবিদ্ধ তদন্ত সত্ত্বেও, বেশিরভাগ প্রমাণই শ্যুটার জেমস আর্ল রের দিকে নির্দেশ করেছিলো। কিং যেদিন গুলিবিদ্ধ হন অর্থাৎ ৪ এপ্রিল সকালের টেলিভিশন সংবাদ এবং সেইসাথে একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছিলো যে মারটিন লুথার কিং মেমফিসের ঠিক কোথায় অবস্থান করছেন। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে, জন উইলার্ড নাম ব্যবহার করে, লেসার মোটেল থেকে রাস্তার উল্টোপাশে অবস্থিত বেসি ব্রুয়ারের ডাউন রুমিং হাউসে রুম ভাড়া করেছিলো খুনি।
এরপরে কয়েক ব্লক দূরে ইয়র্ক আর্মস কোম্পানি থেকে ৪১.৫৫ ডলারের এর বিনিময়ে একজোড়া দূরবীণ কিনেছিল সে। রুমিং হাউসে ফিরে সে বাথরুমে নিজেকে প্রস্তুত করে জানালায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলো, কখন কিং তাঁর হোটেল রুম থেকে বের হন। সন্ধ্যা ০৬.০১ মিনিটে জেমস আর্ল রে, কিংকে গুলি করে এবং তাকে মারাত্মক আহত করে।
শট নেওয়ার পরপরই রে তার রাইফেল, দূরবীণ, রেডিও এবং সংবাদপত্র একটি বাক্সে রাখে এবং একটি পুরানো, সবুজ কম্বল দিয়ে ঢেকে ফেলে। তারপর সে তড়িঘড়ি করে বাথরুমের বাইরে, হলের নীচে প্রথম তলায় গিয়ে দাঁড়ায়। এরপর বাইরে গিয়ে, রে ক্যানিপ অ্যামিউজমেন্ট কোম্পানির বাক্সে তার প্যাকেটটি ফেলে দেয় এবং দ্রুততার সাথে সেখান থেকে গাড়িতে করে চলে যায়। রে যখন মিসিসিপির দিকে যাচ্ছিল, সে সময় পুলিশ সেই টুকরাগুলি একসাথে খুজে পায়।
সেই প্যাকেজ থেকে পুলিশ আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করে এবং এর মধ্যে থাকা দূরবীণ এবং রাইফেলের কারনে নিশ্চিত হয় যে পলাতক ব্যক্তিই মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র এর খুনি। সেই সাথে, এফবিআই এটাও উতঘটন করেছিল যে তারা জেমস আর্ল রে-কে খুঁজছে। দুই মাসের প্রচেষ্টায় তারা অবশেষে ৮ ই জুন লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে রে কে বন্দী করা হয়। তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ৯৯ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ১৯৯৮ সালে মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যাকারী জেমস আর্ল রে কারাগারে মারা যান।
ইতিহাসে মারটিন লুথার কিঙয়ের হত্যাকাণ্ড একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। মূলত সেই ঘটনার পর থেকে কৃষ্ণাঙ্গদেরদের ইতিহাস নতুনভাবে তৈরি হয়েছে। অনেক পরিবর্তন এসেছে, যেগুলো কিং জীবিত অবস্থায় স্বপ্ন দেখেছিলেন।
https://www.thoughtco.com/martin-luther-king-jr-assassinated
https://en.wikipedia.org/wiki/Martin_Luther_King_Jr.
https://www.britannica.com/biography/Martin-Luther-King-Jr