ব্ল্যাক ডেথ(প্লেগ), একটি মধ্যযুগীয় মহামারী।

ব্ল্যাক ডেথ (Black death), একটি মধ্যযুগীয় মহামারী যা সম্ভবত বুবোনিক প্লেগ নামক একপ্রকার রোগ হিসেবে দেখা দিয়েছিল। ইতিহাস ঘটলে দেখা যায়, প্লেগ এর সাথে ইউরোপের নাম অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। বিস্ময়কর ব্যাপার হল এটি চতুর্দশ শতকে ইউরোপীয় জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ মানুষকে হত্যা করেছিল। তবে বুবোনিক প্লেগ এর সূচনা ঘটে এশিয়াতে এবং এই মহাদেশের অনেক অঞ্চলকে ধ্বংস করে রোগটি ইউরোপের দিকে ধাবিত হয়।

দুর্ভাগ্যক্রমে, এশিয়ায় সৃষ্টি হওয়া এ মহামারীর তথ্যগুলো ইউরোপের মতো পুরোপুরি দলিলিকভাবে সংরক্ষণ করা হয় নি। ফলে এশিয়ায়, এর প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে তেমন কোন সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না। তবে ১৩৩০ এবং ১৩৪০ এর দশকে এশিয়া জুড়ে প্রকাশিত কিছু তথ্য থেকে দেখা গিয়েছে যে, এই রোগটি যেখানেই দেখা দিইয়েছিল, সেখানেই সন্ত্রাস ও ধ্বংস ছড়িয়ে পড়েছিল।

ব্ল্যাক ডেথ (Black death) যেভাবে শুরু হয়েছিলো

graveyard-graves-tree-spooky.jpg 

অনেক বিদ্বান এবং ঐতিহাসিক বিশ্বাস করেন, ব্ল্যাক ডেথ (Black death) বা বুবোনিক প্লেগ চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চল থেকে শুরু হয়েছিল। অনেকেই আবার দক্ষিণ-পশ্চিম চীন বা মধ্য এশিয়ার উপকূলের কথাও বলেছেন। আমরা অনেকেই জানি, ১৩৩১ সালে ইউয়ান সাম্রাজ্যে একটি মহামারী শুরু হয়েছিল এবং এর ফলে চীনে মঙ্গোলদের শাসনের অবসান ঘটে।

এর তিন বছর পরে, এই রোগটি চীনের হেবেই প্রদেশের জনসংখ্যার ৯০ শতাংশেরও বেশি লোকের মৃত্যুর কারন হয়েছিলো। সে সময় এখানে মোট ৫০ লক্ষেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছিলো। 

১২০০ খ্রিস্টাব্দের হিসাব অনুযায়ী সে সময় চীনের মোট জনসংখ্যা ছিল ১২ কোটিরও বেশি। তবে ১৩৯৩ সালে একটি আদমশুমারি করা হয়। আদমশুমারি অনুসারে সে সময় কেবল ৬.৫ কোটি চীনা বেঁচে ছিল। ইউয়ান থেকে মিং শাসনকালীন সময়ে সেই নিখোঁজ ৫.৫ কোটি জনগোষ্ঠীর কিছু দুর্ভিক্ষ ও  ক্ষমতা পরিবর্তনের শিকার হয়েছিল, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ ব্ল্যাক ডেথ (Black death) এর কারণে মারা যায়।

সিল্ক রোডের পূর্ব প্রান্তে শুরু হয়ে, ব্ল্যাক ডেথ পশ্চিমে মধ্য এশীয় কাফেলা ও মধ্য প্রাচ্যের বাণিজ্যকেন্দ্র গুলোর পশ্চিম দিকে গিয়ে থামে। পরবর্তীকালে সমগ্র এশিয়া জুড়ে সংক্রামিত লোকদের ভীরে এটি অনেক বেশি প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছিলো।

মিশরীয় পণ্ডিত আল-মাজারিকী তার একটি উক্তিতে উল্লেখ করেছেন “তিন শতাধিক উপজাতি সমস্ত গ্রীষ্ম এবং শীতকালীন শিবিরগুলিতে, তাদের পশু চরানোর সময় এবং এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গমন করার সময় কোন স্পষ্ট কারণ ছাড়াই মৃত্যু বরন করেছিলো।” তিনি দাবি করেছিলেন যে কোরিয়া উপদ্বীপ পর্যন্ত সমস্ত এশিয়াই জনশূন্য হয়ে পড়েছিল। 

ইবনে আল-ওয়ারদী, একজন সিরিয়ান লেখক, যিনি ১৩৪৪ সালে প্লেগের কারণে মারা গিয়েছিলেন। মারা যাওয়ার পূর্বে তিনি লিখেছিলেন, ব্ল্যাক ডেথ হল “অন্ধকারের ভূমি” যা মধ্য এশিয়া থেকে উদ্ভূত হয়েছিল। সেখান থেকে এটি চীন, ভারত, ক্যাস্পিয়ান সাগর এবং “উজবেকিস্তান” এবং সেখান থেকে পারস্য ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।

প্লেগের ভয়াবহতা এবং মৃত্যু

French_Black_death.jpg
French_Black_death

১৩৩৩ সালে পার্সিয়া ও মধ্য প্রাচ্যের ইল-খানাতের (মঙ্গোল) শাসক আবু সাইদ, উত্তরের গোল্ডেন হার্ডের শাসক তার চাচাত ভাইয়ের সাথে যুদ্ধের সময় বুবোনিক প্লেগের কারণে মারা যান। এটি এই অঞ্চলে মঙ্গোল শাসনের সমাপ্তির সূচনার ইঙ্গিত দেয়।

পারস্যের আনুমানিক ৩০% মানুষ চতুর্দশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ব্ল্যাক ডেথ (Black death) এর কারণে মারা গিয়েছিল। একাংশের মঙ্গোল শাসনের পতনের ফলে এবং তৈমুরের (তইমুর লং) পরবর্তী আগ্রাসনের ফলে সৃষ্ট রাজনৈতিক বাধাগুলির কারণে এই অঞ্চলের জনসংখ্যা পুনরুদ্ধার করতে অনেক সময় লেগেছিল।

বর্তমানে কিরগিজস্তানের একটি হ্রদ “ইস্কিক কুল” উপকূলে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের সময় সেখানকার নেস্টোরিয়ান খ্রিস্টান ট্রেডিং সম্প্রদায়টি ১৩৩৮ এবং ১৩৩৯ সালের বুবোনিক প্লেগ দ্বারা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল।

ইস্কিক কুল ছিল সিল্ক রোডের একটি বড় ডিপো এবং এটি কখনও কখনও উদ্ধৃত হয়েছে যে, ব্ল্যাক ডেথ (Black death) র মূল উত্স ছিল আসলে এখানেই। এর পেছনে যৌক্তিক কারণও ছিল। এ অঞ্চলটি ছিল পার্বত্য ইদুরের প্রধান আবাসস্থল, এবং আমরা জানি প্লেগের জঘন্য একটি বাহন হল ইদুর। 

তবে সম্ভবত আরও একটি উৎসের খোঁজ সে সময় পাওয়া যায়, আর তা হল ঐ অঞ্চলের আরও পূর্ব দিকের কিছু ব্যবসায়ীরা ইস্কিক কুলের উপকূলে অসুস্থ মানুষ সহ একটি নৌকা নিয়ে এসেছিল। তবে যাই হোক না কেন, এই প্লেগের কারনে মৃত্যুর হার প্রতি বছরে ক্রম বর্ধমান হারে বাড়ছিলো।

যদিও প্লেগের কারনে মৃত্যুর নির্দিষ্ট সংখ্যা এবং এ সম্পর্কে পরিপূর্ণ কোন ইতিহাস খুব সহজেই পাওয়া যায় না। তবে ইতিহাসের বিভিন্ন স্থানে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আধুনিক কিরগিজস্তানের তালাসের মতো মধ্য এশিয়ার শহরগুলি, রাশিয়ার গোল্ডেন হোর্ডের রাজধানীর প্রায় সবাই এবং বর্তমান উজবেকিস্তানের সমরকন্দ, ব্ল্যাক ডেথের প্রাদুর্ভাবের শিকার হয়েছিল।

সম্ভবত প্রতিটি জনবহুল স্থানের নাগরিকদের কমপক্ষে ৪০ শতাংশ চিরকালের মতো হারিয়ে গিয়েছিলো এ প্লেগের থাবায়, এবং কিছু কিছু অঞ্চলে মৃত্যুর সংখ্যা ১০০ শতাংশে পৌঁছেছিল।

আরও পড়ুনঃ- ১৯১৮ সালের স্প্যানিশ ফ্লু কেন এতটা মারাত্মক ছিল

মঙ্গোলদের উপর প্লেগের প্রভাব

মঙ্গোলদের নতুন অঞ্চল জয়ের বাসনা ব্ল্যাক ডেথ (Black death) এর বিস্তার ঘটাতে অনেক বেশি সাহায্য করেছিলো সে সময়।

১৩৪৪ সালে, গোল্ডেন হার্ডঁ, ক্রিমিয়ান বন্দর নগরী কাফা পুনরায় দখল করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করে। জেনোস-ইতালিয়ান ব্যবসায়ী যারা ১২০০ শতকের শেষদিকে এই শহরটি দখলে নিয়েছিল।

এখানে জনি বেগের অধীনে থাকা মঙ্গোলরা প্রথমে অবরোধের সূত্রপাত করেছিল, যা ১৩৪৭ সাল অবধি স্থায়ী হয়। কাফা নগরী দখল সম্পন্ন করার জন্য মঙ্গোলরা আরও পূর্ব থেকে শক্তিবৃদ্ধি ঘটায়, এবং সেই সাথে পূর্ব দিক থেকে আসা মঙ্গোলরা এই অঞ্চলে মহামারী নিয়ে আসে।

ইতালীয় আইনজীবী গ্যাব্রিয়েল ডি মুসিস, একটি ঘটনা লিপিবদ্ধ করেছিলেন। তার ভাষ্যমতে “পুরো সেনাবাহিনী একটি রোগ দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল যা টারটার্স (মঙ্গোলদের আক্রমণ)কে ছাপিয়ে গিয়েছিল এবং প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করছিল।”

তিনি আরও বলেন, সে সময়ে সেখানকার মঙ্গোল নেতা “লাশ গুলোকে ক্যাট পল্টে (ইদুর রাখার স্থান) রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং তিনি এটা করেছিলেন এই আশায় যে, শহরটিতে মৃতদেহগুলোকে প্রবেশ করালে যে অসহনীয় দুর্গন্ধের সৃষ্টি হবে তাতে সেখানকার প্রত্যেককে হত্যা করা সহজ হবে।”

এই ঘটনাটিকে ইতিহাসের জৈবিক যুদ্ধের প্রথম উদাহরণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়। তবে অন্যান্য সমসাময়িক ইতিহাসবিদরা ব্ল্যাক ডেথ ক্যাটালফ্টস সম্পর্কে কোনও উল্লেখ করেননি। গিলেস লি মুইসিস নামে এক ফরাসী চার্চম্যান নোট করেছেন যে “মারাত্মক রোগটি টারটার সেনাবাহিনীর উপর দেখা দিয়েছিল এবং মরণঘাতী রোগটি এত বড় এবং ব্যাপক ছিল যে তাদের বিশ জন সেনার মধ্যে মাত্র একজনই জীবিত ছিল।” 

এ রোগটি যেভাবেই চেয়েছে, সেভাবেই প্রতিটা অঞ্চলে তার ধ্বংস লীলা চালিয়েছে। গোল্ডেন হোর্ডের কাফার অবরোধ, সেখানকার শরণার্থীদের জেনোয়া জাহাজে করে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছিল। এই উদ্বাস্তুরা সম্ভবত ব্ল্যাক ডেথ (Black death) এর প্রাথমিক উত্স ছিল যা ইউরোপকে শেষ করতে চলেছিল।

মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপে প্লেগের প্রভাব

images-1.jpg

ইউরোপীয় পর্যবেক্ষকরা উদ্বিগ্ন হয়েছিলেন কিন্তু তারা খুব বেশি চিন্তিত ছিলেন না, যখন মধ্য এশিয়া এবং মধ্য প্রাচ্যের পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চলে ব্ল্যাক ডেথ মৃত্যু ঘটিয়ে চলছিল। সে সময় একটি বিবৃতি রেকর্ড করা হয়েছিল, এবং এরকম ছিল “ভারতকে জনশূন্য করা হয়েছিল; টার্টারি, মেসোপটেমিয়া, সিরিয়া, আর্মেনিয়া মৃতদেহ দ্বারা আবৃত হয়েছিল; কুর্দিরা নিরর্থকভাবে পাহাড়ে পালিয়ে গিয়েছিলো।”

এটা সত্যি তবে শীঘ্রই তারাও যে বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ মহামারীর গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণকারী হয়ে উঠবে সে বিষয়ে কোন সন্দেহ ছিলোনা।

বিখ্যাত ভ্রমণকারী ইবনে বতুতা উল্লেখ করেছিলেন, ১৩৩৫ সাল পর্যন্ত “দামেস্কে (সিরিয়ায়) প্রতিদিন মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা ছিল দুই হাজার,”। এ সময় জনগণ প্রার্থনা অব্যাহত রেখেছিল, ফলে তারা এই মহামারীকে পরাস্ত করতে সক্ষম হয়েছিল। ১৩৪৯ সালে, পবিত্র মক্কা শহরটি প্লেগ দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল, সম্ভবত হজ্জ করতে আসা সংক্রামিত তীর্থযাত্রীরা মরন ঘাতী প্লেগ নিয়ে এসেছিল।

মরোক্কোর ইতিহাসবিদ ইবনে খালদুন, এর পিতা-মাতা প্লেগের কারণে মারা গিয়েছিলেন। এই প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে তিনি লিখেছিলেন: “পূর্ব ও পশ্চিম উভয় দেশেই সভ্যতার এক ধ্বংসাত্মক মহামারির দেখা হয়েছিল আমার, যা বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীকে বিধ্বস্ত করেছিল এবং জনসংখ্যা বিলুপ্ত ঘটিয়েছিল। এটি অনেক অঞ্চলকে গ্রাস করেছিল।

সভ্যতার অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস এবং তাদের অনেক অবদান নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল … মানবজাতির সংখ্যা  হ্রাসের সাথে সাথে সভ্যতা্র বিকাশও হ্রাস পেয়েছিল।

অনেক শহর ও এর ভবনগুলি নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো। রাস্তাঘাট ও পথ ঘাট ধ্বংস হয়ে গিয়েছিলো, জনবসতি এবং বিভিন্ন উপজাতি গোষ্ঠী গুলো নিশ্চিন্ন হয়ে গিয়েছিলো, বিভিন্ন রাজবংশ এবং তাদের উপজাতিগুলি জনসংখ্যা হারিয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছিল। মুলত পুরো বিশ্বজগতের পরিবর্তন হয়েছিল এ ব্ল্যাক ডেথ (Black death) এর প্রভাবে। “

আরও পড়ুনঃ- বিশ্বের ইতিহাস বদলে দেয়া কিছু প্রাণঘাতি মহামারী। (প্রাচীনকালেও যার বিস্তার ছিল বর্তমান সময়ের মতো)

ব্ল্যাক ডেথ (Black death)’র পরের সাম্প্রতিক এশিয়ায় প্লেগের প্রকোপ

১৮৫৫ সালে, ব্ল্যাক ডেথ (Black death) এর তথাকথিত “তৃতীয় মহামারী” চীনের ইউনান প্রদেশে পুনরায় ছড়িয়ে পড়ে। আরেকটি প্রাদুর্ভাব বা তৃতীয় মহামারীটির ধারাবাহিকতায় ১৯১০ সালে চিনে উত্থিত হয়েছিল। সে সময় এটি ১ (এক) কোটিরও বেশি লোককে হত্যা করেছিল, এবং তাদের বেশিরভাগই ছিল মনছুরিয়ার নাগরিক।

ব্রিটিশ ভারতেও একই ধরণের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল। ১৮৯৬ সাল থেকে ১৮৯৮ সাল অবধি প্রায় ৩,০০,০০০ লোক মারা গিয়েছিল প্লেগে আক্রান্ত হয়ে। দেশের পশ্চিম উপকূল বোম্বাই (মুম্বাই) এবং পুনেতে এই প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছিল। ১৯২১ সালের মধ্যে, এটি প্রায় ১.৫ কোটি মানুষের জীবন নিয়ে নেয়।

জনসংখ্যার ঘনত্ব এবং প্রাকৃতিক প্লেগ জলাধার (ইঁদুর এবং মারমোট) থাকার কারণে এশিয়া সর্বদাই বুবোনিক প্লেগের মত রোগের আরেক দফা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তবে সৌভাগ্যর বিষয় হল, অ্যান্টিবায়োটিকের সময়োপযোগী ব্যবহার আজ এই রোগ নিরাময় করতে বড় ভুমিকা পালন করেছে।

 ব্ল্যাক ডেথের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য প্রভাব তাহলে কি ছিল?

এশিয়াতে সম্ভবত ব্ল্যাক ডেথ (Black death) এর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ছিল, এবং এটি শক্তিশালী মঙ্গোল সাম্রাজ্যের পতনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল। সর্বোপরি, মহামারীটি মঙ্গোল সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরে শুরু হয়েছিল এবং চারটি খানাটের মানুষকে ধ্বংস করে দিয়েছিল।

মহামারী দ্বারা সৃষ্ট জনসংখ্যার ব্যাপক ক্ষতি এবং সন্ত্রাস রাশিয়ার গোল্ডেন হার্ড থেকে চীনের ইউয়ান রাজবংশ পর্যন্ত মঙ্গোলিয় সরকারকে অস্থিতিশীল করে তুলেছিল। মধ্য প্রাচ্যের ইলখানেট সাম্রাজ্যের মঙ্গোল শাসক তাঁর ছয় ছেলের সাথে এই রোগে মারা গিয়েছিলেন।

যদিও প্যাক্স মঙ্গোলিকা সিল্ক রোড পুনরায় খোলার মাধ্যমে বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের অনুমতি ছিল, তা সত্ত্বেও পশ্চিম চীন বা পূর্ব মধ্য এশিয়ায় এই মারাত্মক ছোঁয়াচে রোগটি পশ্চিম দিকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল। ফলস্বরূপ, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সাম্রাজ্য চূর্ণবিচূর্ণ এবং পতিত হয়েছিল। 

 

তথ্য সুত্রঃ https://www.history.com/topics/middle-ages/black-death

https://en.wikipedia.org/wiki/Black_Death

https://www.thoughtco.com/black-death-in-asia-bubonic-plague-195144

https://www.britannica.com/event/Black-Death

 

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top